ফুডবর্ন ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া | Foodborne viruses and bacteria are types of pathogens

ফুডবর্ন ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া  

এখানে কিছু ফুডবর্ন ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া রয়েছে, যা খাদ্য দূষণের কারণে অসুস্থতা সৃষ্টি করতে পারে, এবং কীভাবে এগুলি বৃদ্ধি পেতে পারে বা দূষিত হতে পারে:



ফুডবর্ন ব্যাকটেরিয়া:

  1. স্যালমোনেলা (Salmonella)

    • রোগ: স্যালমোনেলোসিস
    • উপসর্গ: ডায়রিয়া, জ্বর, পেট ব্যথা, বমি
    • সাধারণ উৎস: কাঁচা মাংস (বিশেষ করে মুরগি), ডিম, দুধ
    • কিভাবে বৃদ্ধি বা দূষিত হতে পারে: স্যালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া কাঁচা বা অর্ধপাকা মাংস, ডিম এবং অপরিষ্কার পানিতে দ্রুত বৃদ্ধি পায়। যদি খাদ্য সঠিকভাবে রান্না না করা হয় বা তা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রাখা হয়, তবে এটি দ্রুত প্রজনন করতে পারে।
  2. এশেরিচিয়া কোলাই (E. coli)

    • রোগ: ই. কোলাই ইনফেকশন, বিশেষ করে E. coli O157:H7
    • উপসর্গ: তীব্র পেট ব্যথা, রক্তযুক্ত ডায়রিয়া, বমি
    • সাধারণ উৎস: অর্ধপাকা গুঁড়া মাংস, অনুপাস্তুরিত দুধ, ফল এবং শাকসবজি
    • কিভাবে বৃদ্ধি বা দূষিত হতে পারে: এটি সাধারণত মাংস (বিশেষ করে কাঁচা বা অর্ধপাকা গুঁড়া মাংস), এবং অপরিষ্কার পানি বা শাকসবজির মাধ্যমে দূষিত হয়। এটি তাপমাত্রা ৪৫°F (৭°C)-এর উপরে দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
  3. ক্যাম্পাইলোবেক্টার (Campylobacter)

    • রোগ: ক্যাম্পাইলোবেক্টেরিওসিস
    • উপসর্গ: ডায়রিয়া (প্রায়শই রক্তযুক্ত), পেট ব্যথা, জ্বর, বমি
    • সাধারণ উৎস: কাঁচা বা আধা-পাকা মুরগি, দূষিত পানি, অনুপাস্তুরিত দুধ
    • কিভাবে বৃদ্ধি বা দূষিত হতে পারে: ক্যাম্পাইলোবেক্টার সাধারণত মুরগির মাংস বা অনুপাস্তুরিত দুধে থাকে এবং এটি ঠান্ডা তাপমাত্রায় বেড়ে উঠতে পারে, তাই মাংস সম্পূর্ণভাবে রান্না না করলে বা অপরিষ্কার পরিবেশে রাখলে এটি ছড়াতে পারে।
  4. লিস্টেরিয়া মনোসাইটোজেনেস (Listeria monocytogenes)

    • রোগ: লিস্টেরিওসিস
    • উপসর্গ: জ্বর, পেশী ব্যথা, বমি, ডায়রিয়া (গর্ভবতী মহিলাদের, নবজাতকদের এবং বয়স্কদের জন্য ঝুঁকি)
    • সাধারণ উৎস: ডেলি মিট, হট ডগ, অনুপাস্তুরিত দুধ, রেফ্রিজারেটেড খাবার
    • কিভাবে বৃদ্ধি বা দূষিত হতে পারে: লিস্টেরিয়া ঠান্ডা পরিবেশেও বৃদ্ধি পেতে পারে, তাই রেফ্রিজারেটরে রাখা খাবারও যদি সঠিকভাবে সংরক্ষিত না হয়, তবে এটি ছড়াতে পারে।
  5. ক্লস্ট্রিডিয়াম বোটুলিনাম (Clostridium botulinum)

    • রোগ: বোটুলিজম
    • উপসর্গ: বমি, পেশী দুর্বলতা, ডাবল ভিশন, গিলতে সমস্যা
    • সাধারণ উৎস: ক্যান করা খাবার, ভুলভাবে সংরক্ষিত খাবার
    • কিভাবে বৃদ্ধি বা দূষিত হতে পারে: এটি সাধারণত তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা ক্যান করা খাবার বা অন্যান্য বন্ধ পাত্রে বেড়ে ওঠে এবং অক্সিজেনের অভাবে এটি বাড়ে।
  6. ক্লস্ট্রিডিয়াম পারফ্রিঞ্জেন্স (Clostridium perfringens)

    • রোগ: ক্লস্ট্রিডিয়াল ফুড পয়জনিং
    • উপসর্গ: পেট ব্যথা, ডায়রিয়া
    • সাধারণ উৎস: মাংস, মুরগি, গ্রেভি, এবং বড় পাত্রে রান্না করা খাবার
    • কিভাবে বৃদ্ধি বা দূষিত হতে পারে: এটি সাধারণত খাবারে তাপমাত্রা সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ না হলে বৃদ্ধি পায়। বড় পরিমাণে রান্না করা খাবারের মধ্যে এটি দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।
  7. স্ট্যাফাইলোকোকাস অরিউস (Staphylococcus aureus)

    • রোগ: স্ট্যাফাইলোকোকাল ফুড পয়জনিং
    • উপসর্গ: বমি, পেট ব্যথা
    • সাধারণ উৎস: ভুলভাবে হ্যান্ডল করা খাবার, বিশেষ করে সালাদ, মাংস, দুধজাত পণ্য
    • কিভাবে বৃদ্ধি বা দূষিত হতে পারে: এটি সাধারণত খাবারের সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করার কারণে দ্রুত বৃদ্ধি পায়, বিশেষত গরম বা গরম খাবারে।

ফুডবর্ন ভাইরাস:

  1. নোরোভাইরাস (Norovirus)

    • রোগ: নোরোভাইরাস ইনফেকশন
    • উপসর্গ: বমি, ডায়রিয়া, পেট ব্যথা, বমি
    • সাধারণ উৎস: দূষিত পানি, শেলফিশ, সালাদ এবং প্রস্তুত খাবার
    • কিভাবে বৃদ্ধি বা দূষিত হতে পারে: নোরোভাইরাস সাধারণত মানুষের মাধ্যমে ছড়ায়, এবং এটি খাদ্যের মধ্যে ম্যানুয়াল হ্যান্ডলিং বা দূষিত পানি বা খাবারের মাধ্যমে ছড়াতে পারে।
  2. হেপাটাইটিস এ ভাইরাস (Hepatitis A virus)

    • রোগ: হেপাটাইটিস এ
    • উপসর্গ: জ্বর, ক্লান্তি, বমি, পেট ব্যথা, যন্ডিস
    • সাধারণ উৎস: দূষিত পানি, কাঁচা শেলফিশ, সালাদ, অপরিষ্কার ফল এবং শাকসবজি
    • কিভাবে বৃদ্ধি বা দূষিত হতে পারে: এটি সাধারণত দূষিত পানি বা অপরিষ্কার হাত বা খাদ্য প্রস্তুতকারকদের মাধ্যমে ছড়ায় এবং খাবারে সহজেই সংক্রমিত হতে পারে।
  3. রোটাভাইরাস (Rotavirus)

    • রোগ: রোটাভাইরাস ইনফেকশন
    • উপসর্গ: তীব্র ডায়রিয়া, বমি, জ্বর, ডিহাইড্রেশন (বিশেষত শিশুদের মধ্যে)
    • সাধারণ উৎস: দূষিত পানি এবং খাবার, বিশেষ করে শিশুর যত্ন কেন্দ্রে
    • কিভাবে বৃদ্ধি বা দূষিত হতে পারে: রোটাভাইরাস সাধারণত মানুষের মাধ্যমে ছড়ায় এবং এটি অপরিষ্কার পানির মাধ্যমে খাদ্যে প্রবাহিত হতে পারে।

সাধারণভাবে বৃদ্ধি এবং দূষিত হওয়ার উপায়:

  • অস্বাস্থ্যকর খাবারের সংরক্ষণ: খাবারের সঠিক তাপমাত্রায় সংরক্ষণ না করা হলে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
  • ভুলভাবে রান্না করা খাবার: খাবারের অর্ধপাক বা অপর্যাপ্ত রান্না করলে রোগজীবাণু দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।
  • অপরিষ্কার হাত এবং পরিবেশ: রান্না করার সময় হাত না ধুয়ে বা অপরিষ্কার পরিবেশে খাবার প্রস্তুত করলে দূষণ ঘটতে পারে।

এইভাবে, খাবার সঠিকভাবে রান্না, সংরক্ষণ এবং পরিবেশন না করলে ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং খাওয়ার মাধ্যমে অসুস্থতা ঘটাতে পারে।

Chef Jahed

https://web.facebook.com/ChefJahed.bd

Post a Comment

Previous Post Next Post