খাবারে বিষাক্ত টক্সিন কি? শরির থেকে টক্সিন বের করার উপায় | Food Toxins Bangla

খাবারে বিষাক্ত টক্সিন কি?
টক্সিন | Toxin's !


প্রতি বিষ হচ্ছে এক প্রকার বিষাক্ত পদার্থ জীব বা জীব কোষের অভ্যন্তরে যা উৎপন্ন হয়। বিষ ক্রিয়া কারক (Toxicant) কৃত্রিমভাবে জীবকোষের বাইরেও প্রস্তুত করা যায়। এই কাজটি প্রথম করেন জৈব রসায়নবিদ লুডউইক ব্রেইজের (১৮৪৯-১৯১৯) প্রতিবিষের ইংরেজি পরিভাষা হল টক্সিন; শব্দটি গ্রিক শব্দ τοξικόν (তোক্সিকন) থেকে এসেছে। প্রতিবিষ ক্ষুদ্র অণু (small molecule), পেপটাইড অথবা প্রোটিন হতে পারে। এগুলি রোগ সৃষ্টি করতে এমনকি জৈব দেহকলা (Biological tissue) ধ্বংস করে দিতে সক্ষম। জৈব বৃহদাকৃতি অণু (macromolecule ম্যাক্রোমলিকিউল: অপেক্ষাকৃত বড় অণু) যেমন উৎসেচক (এনজাইম) অথবা কোষীয় গ্রাহক (cellular receptors) এর উপর নানান ধরনের বিক্রিয়া ঘটাতে সক্ষম। বিষাক্ততার (toxicity) উপর নির্ভর করে প্রতিবিষ বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, যেমন সচরাচর দেখা যায় এরকম ক্ষুদ্র প্রতিবিষ (যেমন মৌমাছির হুলের দংশন) যেমন আছে, তেমনি তাৎক্ষণিক মৃত্যু ঘটাতে সক্ষম (বটুলিনাম প্রতিবিষ botulinum toxin যা খাদ্যে বিষক্রিয়ার মাধ্যমে হয়) এই ধরনের প্রতিবিষও দেখা যায়।

খাবারে বিষাক্ত টক্সিন কি ?

জীবাণু থেকে নিঃসৃতসৃ ফুড পয়জনিং এর বিষাক্ত উপাদানগুলোকে টক্সিন বলে। অথবা,

ব্যাক্টেরিয়া খাদ্য নষ্ট করে যে বিষাক্ত উপাদান উৎপন্ন করে, তাকে টক্সিন বলে ।

"টক্সিন একটি জীবাণু যা প্রাণী বা জীবের অভ্যন্তরে বিপাকীয় কার্যকলাপ দ্বারা উত্পাদিত হয়ে জীব এবং প্রাণীর শরীরের বিরুদ্ধে ক্রমশঃ অ্যান্টিবডি উৎপন্ন করে।

টক্সিন হচ্ছে অধিবিষ বা উপবিষ আর টক্সিক হচ্ছে বিষপূর্ণবা বিষঘটিত। এই উপবিষ দীর্ঘ সময় নিয়ে শরীরে প্রবেশ করে অভ্যন্তরীন বিভিন্ন অর্গানগুলিকে আক্রান্ত করে ফেলে। শুধুমাত্র খাদ্যদ্রব্য বা ব্যবহৃত রাসায়নিক পদার্থছাড়াও সূর্যের আলোর অতিবেগুনি রশ্মি দেহে টক্সিন তৈরি করতে পারে। আপনার দেয়া টক্সিন এর ব্যাখ্যা ঠিক আছে তবে আমি একটু সংযোজন করছি। "টক্সিন একটি জীবাণু যা প্রাণী বা জীবের অভ্যন্তরে বিপাকীয় কার্যকলাপ দ্বারা উৎপাদিত হয়ে জীব এবং প্রাণীর শরীরের বিরুদ্ধে ক্রমশঃ অ্যান্টিবডি উৎপন্ন করে। বোটালিজম টক্সিন এর বর্ণিল মাইক্রোগ্রাফ। এই টক্সিন ক্লোজট্রাডিয়াম বটুলিনাম ব্যাকটেরিয়া হতে উতপন্ন হয়।


ফুড টক্সিকোলজি কি?

ফুড টক্সিকোলজি (Food Toxicology) আলোচনা করে কীভাবে বিভিন্ন খাদ্য পণ্যে প্রাকৃতিক বা কৃত্রিম বিষ এবং বিষাক্ত পদার্থ জীবন্ত প্রাণীর জন্য ক্ষতিকারক, ক্ষতিকর বা প্রতিক‚ল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। খাদ্য বিষাক্ত বিদ্যা/বিষ-বিজ্ঞান একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয় কারণ খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খলটি আরও বহুজাতিক হয়ে উঠছে, এবং যে কোনো দূষণ বা বিষাক্ত প্রাদুর্ভাব গুরুতর ও বিস্তৃত বিরূপ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। ফুড টক্সিকোলজি খাদ্য নিরাপত্তা এবং বিষাক্ততার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করে, যার মধ্যে প্রকৃতি, বৈশিষ্ট্য, প্রভাব, এবং খাদ্যে বিষাক্ত পদার্থের সনাক্তকরণ এবং মানুষের মধ্যে তাদের রোগের বহিঃপ্রকাশের অধ্যয়ন অন্তর্ভুক্ত। এই আলোচনায় ভোক্তা-পণ্য নিরাপত্তার অন্যান্য দিকও অন্তর্ভুক্ত থাকে। নিম্নলিখিত বিষয়গুলি খাদ্যে উপস্থিত বিষাক্ত পদার্থের তিনটি প্রধান শ্রেণীবিভাগকে তুলে ধরে:

  •  ১. প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত বিষাক্ত পদার্থ।
  •  ২. অণুজীব থেকে আসা বিষাক্ত পদার্থ।
  • ৩. বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ ও কীটনাশক।


প্রাকৃতিক টক্সিন একজাতীয় বিষাক্ত যৌগ যা প্রাকৃতিকভাবে জীবিত জীব দ্বারা উৎপাদিত হয়। এই বিষাক্ত পদার্থগুলি ঐ জীবের জন্য ক্ষতিকর নয়, তবে এগুলি মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীর জন্য বিষাক্ত হতে পারে। উদাহরণ- বিষাক্ত মাশরুম, লেকটিন ইত্যাদি।

মাইক্রোবিয়াল টক্সিন বা অণুজীবঘটিত বিষাক্ত পদার্থ হলো ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাক দ্বারা উৎপাদিত টক্সিন। মাইক্রোবিয়াল টক্সিন সরাসরি টিস্যুকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং ইমিউন সিস্টেমকে অক্ষম করে সংক্রমণ এবং রোগ সৃষ্টি করে। কিছু ব্যাকটেরিয়াল টক্সিন, যেমন বোটুলিনাম নিউরোটক্সিন, সবচেয়ে শক্তিশালী প্রাকৃতিক টক্সিন হিসেবে পরিচিত।

কীটনাশকের বিষাক্ততা তার কার্যকারিতা এবং অন্যান্য কারণের উপর নির্ভর করে। উদাহরণস্বরূপ, কীটনাশক (insecticides) মানুষের প্রতি হার্বিসাইডের (herbicides) চেয়ে বেশি বিষাক্ত হতে পারে। একই রাসায়নিকের বিভিন্ন মাত্রায় বিভিন্ন প্রভাব থাকতে পারে (একজন ব্যক্তি কতটা রাসায়নিকের সংস্পর্শে এসেছে)। এটি যেভাবে সংস্পর্শে আসে, তার উপরও নির্ভর করতে পারে (যেমন গিলে ফেলা, শ্বাস নেওয়া বা ত্বকের সাথে সরাসরি যোগাযোগ)।

খাবারে প্রাকৃতিক টক্সিন

প্রাকৃতিক টক্সিন হল বিষাক্ত যৌগ যা প্রাকৃতিকভাবে জীবিত জীব দ্বারা উত্পাদিত হয়। এই বিষাক্ত পদার্থগুলি নিজেরাই জীবের জন্য ক্ষতিকারক নয়, তবে খাওয়ার সময় মানুষ সহ অন্যান্য জীবিত জিনিসের জন্য বিষাক্ত হতে পারে। 

এই রাসায়নিক যৌগগুলির বিভিন্ন কাঠামো রয়েছে এবং জৈবিক কার্যকারিতা এবং বিষাক্ততার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।

শিকারী, পোকামাকড় বা অণুজীবের বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসাবে বা জলবায়ু চাপের প্রতিক্রিয়ায় ছাঁচের মতো অণুজীবের আক্রমণের ফলে (যেমন খরা বা অত্যধিক আর্দ্রতা) কিছু বিষাক্ত পদার্থ উদ্ভিদ দ্বারা উত্পাদিত হয়।

বিষাক্ত পদার্থের অন্যান্য প্রাকৃতিক উত্সগুলি হল মাইক্রোস্কোপিক শৈবাল এবং মহাসাগরের প্লাঙ্কটন বা কখনও কখনও হ্রদ যা রাসায়নিক যৌগ তৈরি করে যা মানুষের জন্য বিষাক্ত কিন্তু মাছ বা শেলফিশের জন্য বিষাক্ত নয় যা এই বিষ-উৎপাদনকারী জীবগুলিকে খায়।

লোকেরা যখন এই বিষযুক্ত মাছ বা শেলফিশ খায়, তখন অসুস্থতা দ্রুত অনুসরণ করতে পারে। কিছু সাধারণ প্রাকৃতিক টক্সিন যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে তা নীচে বর্ণনা করা হয়েছে।  

পানিতে বায়োটক্সিন !

সাগর এবং মিঠা পানিতে শেওলা দ্বারা উত্পাদিত টক্সিনকে অ্যালগাল টক্সিন বলে। কিছু প্রাকৃতিকভাবে উদ্ভূত শৈবাল প্রজাতির ফুলের সময় অ্যালগাল টক্সিন উত্পাদিত হয়। ঝিনুক, স্ক্যালপস এবং ঝিনুকের মতো শেলফিশে মাছের চেয়ে এই বিষাক্ত পদার্থ থাকার সম্ভাবনা বেশি। 

অ্যালগাল টক্সিনগুলি মানুষ, অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণী বা মাছের মধ্যে ডায়রিয়া, বমি, টিংলিং, প্যারালাইসিস এবং অন্যান্য প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে। অ্যালগাল টক্সিন শেলফিশ এবং মাছের মধ্যে আটকে যেতে পারে বা পানীয় জলকে দূষিত করতে পারে। তাদের কোন স্বাদ বা গন্ধ নেই এবং রান্না বা হিমায়িত করে ধ্বংস হয় না।

আরেকটি উদাহরণ হল ciguatera fish poisoning (CFP) সিগুয়েটক্সিন-উৎপাদনকারী ডাইনোফ্ল্যাজেলেট দ্বারা দূষিত মাছ খাওয়ার কারণে। সিগুয়েটক্সিনকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য পরিচিত কিছু মাছের মধ্যে রয়েছে ব্যারাকুডা, ব্ল্যাক গ্রুপার, হাঙ্গর এবং কিং ম্যাকেরেল। সিগুয়েটেরার বিষক্রিয়ার লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে বমি বমি ভাব, বমি, এবং স্নায়বিক লক্ষণ যেমন আঙ্গুল এবং পায়ের আঙ্গুলের মধ্যে ঝনঝন সংবেদন। বর্তমানে সিগুয়েটের বিষের কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই।

সায়ানোজেনিক গ্লাইকোসাইড !

সায়ানোজেনিক গ্লাইকোসাইড হল ফাইটোটক্সিন (উদ্ভিদ দ্বারা উত্পাদিত বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ) যা বিশ্বের কিছু অংশে খাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত অন্তত 2000টি উদ্ভিদ প্রজাতিতে পাওয়া যায়। কাসাভা, সোর্ঘাম, পাথরের ফল, বাঁশের শিকড় এবং বাদাম বিশেষত গুরুত্বপূর্ণ সায়ানোজেনিক গ্লাইকোসাইডযুক্ত খাবার।  একটি সায়ানোজেনিক উদ্ভিদের সম্ভাব্য বিষাক্ততা প্রাথমিকভাবে সায়ানাইডের ঘনত্ব তৈরি করার সম্ভাবনার কারণে যা উন্মুক্ত মানুষের জন্য বিষাক্ত। মানুষের মধ্যে, তীব্র সায়ানাইড বিষক্রিয়ার ক্লিনিকাল প্রকাশের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে: দ্রুত শ্বাস নেওয়া, রক্তচাপ কমে যাওয়া, মাথা ঘোরা, মাথাব্যথা, পেটে ব্যথা, বমি, ডায়রিয়া, মানসিক বিভ্রান্তি, মোচড়ানো সায়ানোসিস এবং টার্মিনাল কোমা।

Furcoumarins !

এই টক্সিনগুলি অনেক গাছে পাওয়া যায়, যেমন পার্সনিপস (গাজর এবং পার্সলে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত), সেলারি শিকড়, সাইট্রাস গাছ (লেবু, চুন, আঙ্গুর, বার্গামট) এবং কিছু ভেষজ। Furocoumarins হল স্ট্রেস টক্সিন এবং চাপের প্রতিক্রিয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়, যেমন উদ্ভিদের শারীরিক ক্ষতি। 

এর মধ্যে কিছু টক্সিন সংবেদনশীল ব্যক্তিদের মধ্যে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। Furocoumarins ফটোটক্সিক, তারা সূর্যালোক (UVA এক্সপোজার) অধীনে গুরুতর ত্বক প্রতিক্রিয়া হতে পারে। যদিও প্রধানত ডার্মাল এক্সপোজারের পরে ঘটে থাকে, তবে উচ্চ মাত্রার ফারকোমারিন যুক্ত কিছু শাকসবজি বেশি পরিমাণে খাওয়ার পরেও এই ধরনের প্রতিক্রিয়া জানা গেছে। 

লেকটিন !

অনেক ধরনের মটরশুটি লেকটিন নামক টক্সিন ধারণ করে, এবং কিডনি মটরশুটিতে সর্বাধিক ঘনত্ব থাকে - বিশেষ করে লাল কিডনি বিন। 4 বা 5 কাঁচা মটরশুটি গুরুতর পেট ব্যথা, বমি এবং ডায়রিয়া হতে পারে। শুকনো মটরশুটি কমপক্ষে 12 ঘন্টা জলে ভিজিয়ে রাখলে এবং তারপরে কমপক্ষে 10 মিনিটের জন্য জলে জোরে সেদ্ধ করলে লেকটিনগুলি অদৃশ্য হয়ে যায়। টিনজাত কিডনি মটরশুটি ইতিমধ্যে প্রক্রিয়া করা হয়েছে এবং তাই পরবর্তী প্রক্রিয়াকরণ ছাড়াই ব্যবহার করা যেতে পারে।

মাইকোটক্সিনস !

মাইকোটক্সিন প্রাকৃতিকভাবে নির্দিষ্ট ধরণের ছাঁচ দ্বারা উত্পাদিত বিষাক্ত যৌগ। যে ছাঁচগুলি মাইকোটক্সিন তৈরি করতে পারে তা অনেক খাদ্যদ্রব্য যেমন শস্য, শুকনো ফল, বাদাম এবং মশলাগুলিতে বিকাশ লাভ করে। ছাঁচের বৃদ্ধি ফসল কাটার আগে বা পরে, সঞ্চয়ের সময়, খাবারের ভিতরে/অভ্যন্তরে, প্রায়শই গরম, আর্দ্র এবং আর্দ্র অবস্থায় হতে পারে।

বেশিরভাগ মাইকোটক্সিন রাসায়নিকভাবে স্থিতিশীল এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে বেঁচে থাকে। খাদ্যবাহিত মাইকোটক্সিনগুলির প্রভাব তীব্র হতে পারে, গুরুতর অসুস্থতার লক্ষণ এবং এমনকি অত্যন্ত দূষিত খাদ্য পণ্য খাওয়ার পরেই মৃত্যু দেখা দেয়। দীর্ঘস্থায়ী মাইকোটক্সিন এক্সপোজারের দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য প্রভাবের মধ্যে রয়েছে ক্যান্সার এবং ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি।

কাঁচা রক্ত, পশুর মলমূত্র মাখামাখি হয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে। আর এ থেকেই আপনার পরিবার পড়তে পারে কিছু স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। তাই জেনে নেওয়া উচিত, কী ধরনের জীবাণু কাঁচা মাংস থেকে ছড়াতে পারে, আর তার জন্য কী করা উচিত। মাংস কাটাকুটির দুই ঘণ্টার মধ্যে ফ্রিজ করা ভালো।

সারা বছর আমরা কসাইয়ের দোকান বা সুপারশপ থেকেই মাংস কিনি, তারপর সেটা প্যাকেট করে ফ্রিজে রেখে খাই। একমাত্র কোরবানির ঈদের দিনই আমাদের নিজেদের বাড়িতে বা উঠানে, কিংবা কার পার্কিংয়ে গরু, খাসি কোরবানি দেওয়া হয় এবং সরাসরি সেখান থেকে কাঁচা মাংস আমাদের রান্নাঘরে এসে প্রবেশ করে। এই কাঁচা মাংস ব্যবস্থা করার কোনো অভিজ্ঞতা না থাকায় এ থেকে ছড়াতে পারে নানা রোগ। বাসার নিচেই মাংস কাটাকুটি হচ্ছে, সেটা আবার পাত্র বা গামলায় করে সিঁড়ি বা লিফট বেয়ে ঘরে আনা হচ্ছে, ঘরে আবার সেটা হয় সরাসরি রান্নার চুলায় চলে যাচ্ছে বা প্যাকেট হচ্ছে। এই পুরো প্রক্রিয়াটির মধ্যে স্বাস্থ্যসচেতনতার দিকটি প্রায়ই উপেক্ষিত থাকে। কাঁচা রক্ত, পশুর মলমূত্র মাখামাখি হয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে। আর এ থেকেই আপনার পরিবার পড়তে পারে কিছু স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। তাই জেনে নেওয়া উচিত, কী ধরনের জীবাণু কাঁচা মাংস থেকে ছড়াতে পারে, আর তার জন্য কী করা উচিত। 

ফিতা কৃমি !

টেপ ওয়ার্ম বা টিনিয়া বা সাদা বাংলায় ফিতা কৃমি মূলত আধা সেদ্ধ বা কাঁচা মাংস থেকেই ছড়ায়। সঠিক প্রক্রিয়ায় মাংস পরিষ্কার, সেদ্ধ বা রেফ্রিজারেটর না করলে আপনি এই পরজীবীতে আক্রান্ত হতে পারেন। সাধারণত গরুর মাংসে থাকে টিনিয়া সাজিনেটা। শিশু টিনিয়াকে বলে সিস্টিসারকাই, যা পশুর মাংসের মধ্যে বছরে পর বছর রয়ে যেতে পারে। এই মাংস দ্বারা সংক্রমিত হলে মানুষের অন্ত্রে গিয়ে তা বড় কৃমিতে পরিণত হয়, ডিম ছাড়ে। এমনকি এ থেকে মস্তিষ্ক পর্যন্ত আক্রান্ত হতে পারে।

ট্রাইচিনেলা বা গোল কৃমি !

পশু যদি আগে থেকে গোল কৃমি বা ট্রাইচিনেলার লার্ভা দ্বারা সংক্রমিত থাকে, তবে সেই পশুর মাংসের মাধ্যমে তা সংক্রমিত হতে পারে। এখানেও ভালো করে পরিষ্কার আর সেদ্ধ না করলেই কেবল ঝুঁকি বাড়ে। আধসেদ্ধ স্টেক, সালামি ইত্যাদি ঝুঁকিপূর্ণ।

ই কোলাই

সাধারণত এই ব্যাকটেরিয়া পশুর মল এবং বৃহদন্ত্রে থাকে। কোরবানির মাংস কাটাকুটির সময় পশুর মল দ্বারা দূষিত হয়ে যেতে পারে। কারণ, এখানে জবাই, ছাড়ানো, কাটা ও প্রসেস—সব একই জায়গায় করা হয়ে থাকে। ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার না করলে ই কোলাই লেগে থাকতে পারে মাংসে। যাঁরা গরুর ভুঁড়ি খেয়ে থাকেন, তাঁরা মনে রাখবেন যে ভুঁড়ি হচ্ছে বৃহদন্ত্র। আর বৃহদন্ত্রে ই কোলাই ভরা। তাই খুব ভালো করে সেদ্ধ করে একে আগে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে। ভুঁড়ি যিনি পরিষ্কার করেন বা হ্যান্ডেলিং করেন, তার হাত ই কোলাই দ্বারা দূষিত হওয়ার ঝুঁকি অনেক।

ক্যামপাইলোব্যাকটার ও ইয়ারসিনিয়া

এ ধরনের জীবাণু সাধারণত প্রক্রিয়াজাত মাংস থেকে ছড়ায়। সসেজ, স্টেক, বার্গার প্যাটি ইত্যাদি করার জন্য আজকাল অনেকেই কোরবানির পশুর মাংস রেখে দেন। সঠিকভাবে প্রক্রিয়াজাত ও ফ্রিজিং না করা হলে এসব সংক্রমণ হতে পারে। ক্যামপাইলাব্যাকটার সংক্রমণ হলে পেটব্যথা, জ্বর, ডায়রিয়া হতে পারে। তবে এর একটি উল্লেখযোগ্য জটিলতা হলো জিবিএস। আবার ইয়ারসিনিয়া হলে অন্ত্রে প্রদাহ হয় এবং পেটব্যথা, মাথাব্যথা, বমি হতে পারে। শিশুরা এতে বেশি আক্রান্ত হয়।

কাঁচা মাংসে নানা ধরনের ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, পরজীবী এমনকি টক্সিন থাকতে পারে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক

সালমোনেলা

সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হলে টাইফয়েড জ্বর হয়। পশু এই জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত থাকলে ঠিকমতো রান্না না করা মাংস থেকে সালমোনেলা ছড়াতে পারে। আবার যিনি মাংস কাটাকুটি বা প্রসেস করছেন বা রান্না করছেন তাঁর হাত ঠিকমতো ধোয়া না হলেও তার থেকে এটি ছড়াতে পারে।

ওপরের জীবাণুগুলো ছাড়াও কাঁচা মাংসে নানা ধরনের ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, পরজীবী এমনকি টক্সিন থাকতে পারে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক। এ কারণে সচেতনতা জরুরি।


শে দের কিচেনে করোনিয় ? 

শেফরা মাংস কাটার বা প্রিপারেশন দুই ঘণ্টার মধ্যে ফ্রিজ করা ভালো। অনেক শেফ মাংস দীর্ঘ সময় ফেলে রাখেন এবং অনেক দেরিতে ফ্রিজে ঢোকান। এটা ঠিক নয়। ফ্রিজিং করার সময় এগুলোকে সঠিকভাবে প্যাকেট করতে হবে যেন ওপরের অংশ মসৃণ থাকে এবং আর্দ্রতা রক্ষিত হয়। মাইনাস তাপমাত্রায় ফ্রিজিং করতে হবে।

মাংস রান্না করার সময় ভালো করে সেদ্ধ করতে হবে। যখন মাংসের গোলাপি ফাইবার বা আঁশগুলো আর দেখা যাবে না এবং মাংসের টুকরার ভেতর থেকে আর রস বের হবে না, তখন বুঝবেন ঠিকভাবে রান্না করা হয়েছে। রান্নার সময় টুকরা মাংসের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা কমপক্ষে ৬৩ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড এবং কিমার মাংসের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা কমপক্ষে ৭১ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড হওয়া বাঞ্ছনীয়।

কাঁচা মাংস যে শেফ হাত দিয়ে ধরছেন, কাজ শেষ হওয়া মাত্র সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। অনেক সময় দেখা যায়, যিনি মাংস টেনে আনছেন, তিনি ওপরে এসেই আবার চা বানাচ্ছেন বা গেস্টের জন্য খাবার তৈরি করছেন—এমনটা কখনোই করবেন না।

গ্রিল, শিক বা ওভেন বেক করা মাংসের পদ তৈরি করার সময় লক্ষ করবেন মাংসের ভেতর ভালো করে সেদ্ধ হলো কি না এবং অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাল কি না।

মাংস কাটাকুটিতে ব্যবহৃত দা, বঁটি, ছুরি ভালো করে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। মাংস পরিবহন করতে যে পাত্র, গামলা, বালতি ব্যবহৃত হয়েছে, সেগুলোও ভালো পরিষ্কার হতে হবে। বুচারি  বা মিট রোমের কাজ হওয়ার পর ঘরে বা কোথাও লেগে থাকা সব রক্ত, ময়লা, মলমূত্র জীবানু নাশক ক্যামিকেল বা ব্লিচিং পাউডার দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।


কিভাবে প্রাকৃতিক বিষ থেকে স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমাতে পারেন ?

যখন প্রাকৃতিক বিষের কথা আসে, তখন মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে সেগুলি বিভিন্ন শস্য এবং খাদ্যদ্রব্যের মধ্যে পাওয়া যেতে পারে। 

একটি স্বাভাবিক ভারসাম্যপূর্ণ, স্বাস্থ্যকর ডায়েটে, প্রাকৃতিক বিষের মাত্রা তীব্র এবং দীর্ঘস্থায়ী বিষাক্ততার থ্রেশহোল্ডের নীচে থাকে।

ভেজাল খাবারে বা খাবারে ভেজাল যুক্ত করে থাকেন অনেক ব্যবসায়ি এর কারনে খাবার গুলোতে প্রচুর ক্যামিকেল দেয়া হয় এই ক্যামিকেল এর কারনে খাবারে প্রচুর টক্সিন থাকতে পারে। কি খাবারে কি ক্যামিকেল দেয়া হয় কিছু ধারনা দেয়ার নিয়ে দেয়া হলো।

১ দুধে: ফরমালিন
২ গরুর দুধ বাড়াতে: পিটুইটারী গ্লান্ড ইনজ গ্রুপ
৩ মাছ: ফরমালিন
৪ শাকসবজি টাকা রাখতে: কার্সালফেট
৫ আম, লিচু জাম পাকাতে: কারাইড
৬ আম, লিচু, জাম সংরক্ষণ: ফরমালিন
৭ ফল গাছে তৈরিই: হরমোন ও কীটনাশক
৮ তরমুজে সিরিঞ্জ দেয়: পটাশিয়াম পার ম্যাঙ্গানেট
৯ কলা পাকানো হয়: ক্যালসিয়াম কারাইড
১০ কফি পাউডারে: তেঁতুলের বিচির গুড়া
১১ ম্যাচ: ইটের গুড়া
১২ হলুদে: লেড ক্রোমেট/ লেড আয়োডাইড
১৩ মুড়িকে ধবধবে সাদা ও বড় করতে: হাইড্রোজ ও ইউরিয়া
১৪ দীর্ঘক্ষন মমচে ধরে জিলিপি, চানাচুরে: পোড়া মবিল
১৫ পছন্দ করতে আইসক্রিম, বিস্কুট, সেমাই, নুডল্যাস ও নেটওয়ার্কে: কাপড় ও মানদণ্ড
১৬ ফলে রস তৈরি: ক্যামিকেলস দিয়ে
১৭ বিদেশী যুদ্ধোত্তীর্ণ খাদ্য/ঔষধ/ম্যামিকেলস: নতুন সম্ভাবনার স্টিকার লাগিয়ে
১৮ চাল চকচক করতে: ইউরিয়া
১৯ পিয়াজু, জিলাপিতে: এমোনিয়া।
২০ পানি-২০ লিটার (২ টাকা গ্লাস) সবই অটোমেশিনে হাতে নেই পারক্সাইড দিয়ে নাম মাত্র পানিতে ধুয়া হয়। ফলে হরমোন প্রয়োগ করা হয়।
২১ সবুজ ফল ও শাকশব্জিতে কাপড়ের সবুজ রঙ ব্যাবহার হয়, সেও তাই।
২২ খামারের মুরগিতে জেলা ক্রোমিয়াম, লেড আর এন্টিবায়োটিক তো আছেই, চাষের মাছেও তাই।
২৩ জুস, লাচ্ছ তো উচ্চার প্রিজারভেটিভ।
২৪ রুহ আফজাহ আর হরলিক্স তো প্রমানে অপারগ যে বাস্তবিক কল্যাণকর কিছু আছে।
২৫ মসল্লায় প্রকাশ (মেটালিক অক্সাইড)।
২৬ সরিষার তেল ক্যালে ঝাঁজামিকেল।
২৭ সয়াবিনে পামওয়েল।
২৮ শুটকিতে কিটনাশক।
২৯ কসমটিক্সে ক্যান্সারের উপাদান লেড, মারকারি ও ডাই ইত্যাদি রয়েছে।

খাবারে প্রাকৃতিক বিষাক্ত উপাদান থেকে স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমাতে, লোকেদের দেওয়া হয়:

স্বয়ংক্রিয়ভাবে অনুমান করবেন না যে কিছু পাঠ্য যদি এটি 'প্রাকৃতিক' হয়;

পাচা, ক্ষতিগ্রস্থ বা বর্ণ বিভা, বিশেষ করে ছাঁচযুক্ত খাবারের দিন;
এমন কথা বলে দিন যার গন্ধ নেই বা অস্বাভাবিক জাতীয় আছে; এবং শুধুমাত্র মাশরুম বা অন্যান্য বন্য গাছপালা খান যেগুলি দৃঢ়ভাবে অ-বিষাক্ত হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

ক্রিয়া কলাপের ভিত্তিতে টক্সিন কে পাঁচ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা :-

  • কিডনির উপর কাজ করে এমন টক্সিন। 
  • লিভারের উপর কাজ করে এমন  টক্সিন। 
  • হৃদপিন্ডের উপর কাজ করে এমন টক্সিন। 
  • স্নায়ুতন্ত্রের ওপর কাজ করে এমন টক্সিন। 
  • অন্যান্য টিস্যুর উপর কাজ করে এমন টক্সিন। 

 

ঘণত্বের ভিত্তিতে টক্সিনকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:-

১/ নিম্ন মাত্রার টক্সিন। 

২/ উচ্চমাত্রার টক্সিন। 


শরিরে টক্সিন বাড়ার এর লক্ষণ কি কি ?

সাধারণত টক্সিন এর বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ রয়েছে। লক্ষণসমূহ হলো নিম্নরুপ:-

১.বেশি টক্সিন এর প্রভাবে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। 

২. তাৎক্ষণিকভাবে শরীরের ওজন বেড়ে যাওয়া টক্সিন এর একটি লক্ষণ। 

৩. অনেকের ক্ষেত্রে শরীর অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে যায় পাশাপাশি কর্ম ক্ষমতা হ্রাস পায়। 

৪. শরীরে বিভিন্ন ধরনের  র‍্যাস, ফোড়া, অত্যাধিক ঘাম ইত্যাদি বিভিন্ন চর্মরোগ দেখা দিতে পারে এমনকি অন্ত্রে ও লিভারে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

৫. অধিকাংশ সময় মেজাজ খারাপ বা বিগড়ে যাওয়া পাশাপাশি মোট সুইম হতে পারে। এমনকি অনেকে এস্পার্টেম নামক টক্সিন  দেখা দিলে ডিপ্রেশনে চলে যেতে পারে। 

৬. ব্রেনের বিভিন্ন টিস্যুর কারণে মাইগ্রেন অথবা মাথা যন্ত্রণা নামক সমস্যা দেখা দেয়। 

৭. কালশিটে এবং পিসিতে ব্যথা জনিত বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। 

৮. ব্রাশ করেও মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে পারে না বা নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ ছড়ায়। 

৯. সাধারণ সময়ের তুলনায় অধিকাংশ সময় টক্সিন এর ক্ষেত্রে ইনসমনিয়া বা অনিদ্র জনিত সমস্যা হতে পারে। ফলে ঘুমের ঘাটতি তৈরি হওয়ার কারণে শরীর থেকে সহজেই টক্সিন গুলো আর বাইরে যেতে পারে না। 

১০. ওদের পরিমাণ ঘেমে যাওয়া বাঁ শরীরে তাপমাত্রা হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়া। উপরোক্ত লক্ষণগুলো হলো টক্সিন রূপটি হওয়ার বিভিন্ন ধরনের লক্ষণসমূহ। 


শরির হতে টক্সিন দূর করার উপায়?

যে সকল দিকগুলো সঠিকভাবে খেয়াল রাখার মাধ্যমে টক্সিন দূর করা যায় তার উপায় গুলো নিম্ন তুলে ধরা হলো :

১. রান্না করার সময় সব সময় ভালো করে  ধুয়ে তারপর রান্না করা। ফোনে সবজিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থগুলো পরিষ্কার করে রান্না করা হয়। 

২. বিভিন্ন ধরনের ফ্রেশণার বা সেন্টার ক্যান্ডেল পাওয়া যায় যেগুলো বেশিরভাগ টক্সিন থাকে তাই এয়ার ফ্রেশনার নৈবচ  নির্বাচন করে তা ব্যবহার করা। 

৩. প্রাকৃতিক পদ্ধতির ক্ষেত্রে রুমের ভিতরে বাতাস পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে ঘরের মধ্যে গাছ আর কোন বিকল্প নেই। যা রান্না করে অধিকাংশ টক্সিন গুলোকে কমিয়ে দিবে। 

৪. বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করার ক্ষেত্রে অথবা শ্যাম্পু এবং মেকআপে যাবতীয় জিনিসগুলো ব্যবহার করার পূর্বে তা ভালোভাবে পড়ে নিতে হবে। 

৫. পরিবর্তে পরিমানে পানি পান করার মাধ্যমে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ কংসের যে সকল টক্সিন রয়েছে চাদর করা বা পরিশ্রুত করা যায়। 

৬৷ ইলেকট্রিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের মাইক্রোওয়েভের ব্যবহার রয়েছে যা কমানোর মাধ্যমে, এমনকি ৯৭ শতাংশ খাদ্যগুণ নষ্ট হওয়ার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য মাইক্রোওয়েভের ব্যবহার কমান। 

৭. বিভিন্ন ধরনের তেল রয়েছে যেগুলোর মধ্যে টক্সিন থাকতে পারে। তাই রান্না করার ক্ষেত্রে একবার ব্যবহৃত তেল পুনরায় ব্যবহার থেকে দূরে থাকতে হবে এবং টক্সিন মুক্ত তেল ব্যবহার করতে হবে। 

৮. যথাসম্ভব প্লাস্টিকের যে সকল বোতল বা অন্যান্য প্লেট রয়েছে সেগুলো পুরোপুরি ভাবে ব্যবহার করা থেকে দূরে থাকা এমনকি ব্যবহার করা বন্ধ করে দেওয়া। 

৯. প্রতিদিন নিয়মিত পরিমাণে ব্যায়াম করার মাধ্যমে এবং শারীরিক কস রাতের মাধ্যমে শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত টক্সিন বেরিয়ে যায় ফলে ত্বক সুন্দর এবং প্রাণোউজ্জ্বল থাকে। 

ইরের খাবার, দূষণ বা রাসায়নিকের কারণে অনেক সময় শরীরে টক্সিন জমতে শুরু করে, যা অপসারণ করা দরকার। আমাদের লিভার, কিডনি, ত্বক এবং ফুসফুস সব সময় শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে কাজ করে। কিছু খাদ্য উপাদান এই ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়ায় সাহায্য করতে পারে। যেমন-

শরীর থেকে টক্সিন করতে সাহায্য করে কি কি খাবার ? 

বিটরুট: বিটরুটে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এই কারণে এটি লিভারের জন্যও বেশ উপকারী। এটি প্রাকৃতিকভাবে রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। এতে থাকা নাইট্রিক অ্যাসিড রক্তের টক্সিন পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। রক্ত পরিষ্কার করতে নিয়মিত বিটরুটের রস পান করতে পারে। এটি শরীরকে ডিটক্সিফাই করে।

হলুদ: হলুদের অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণের কারণে বহু বছর ধরে ওষুধি হিসেবে এটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এতে থাকা কারকিউমিন উপাদান লিভারকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে। এটি আপনাকে ফ্রি র‌্যাডিক্যাল ক্ষতি থেকেও রক্ষা করে। অতএব আপনার খাদ্যতালিকায় হলুদ অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন যা আপনার শরীরের ডিটক্সিফিকেশন করতে ভূমিকা রাখে।

লেবু: লেবুতে থাকা ভিটামিন সি রাগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এর পাশাপাশি এটি হজম প্রক্রিয়ায়ও বেশ উপকারী। এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্টও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। লেবু পানি মিশিয়েও পান করতে পারেন। এটি শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে।

ধনে পাতা: ধনেপাতা শুধুমাত্র খাবারে স্বাদই বাড়ায় না, এটি কোলেস্টেরল কমাতে এবং হজমেও উপকারী। এর সঙ্গে এটি শরীর থেকে ভারী ধাতু অপসারণ করতেও সাহায্য করে। নিয়মিত ধনে পাতা খেলে শরীরকে ডিটক্সিফাই করে।

রসুন: রসুনে প্রচুর পরিমাণে সালফার থাকে, যা লিভারকে টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি এটি চুলের জন্যও বেশ উপকারী। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রসুন অন্তর্ভুক্ত করুন, এটি আপনার শরীরকে ডিটক্স করতে সাহায্য করব। 

Post a Comment

Previous Post Next Post