ক্যালরি কি | ক্যালরি হিসাব করে দৈনিক কতটুকু খাওয়া উচিত?
ক্যালরি কি- এর এক কথায় জবাব হল, ইহা শক্তির একক।এই বিষয় গুলো জানা একজন প্রফেশন শেফ এর জন্য অতন্ত্য জরুরি। পুষ্টির ভাষায়, ক্যালরি ঐ শক্তিকে বোঝানো হয় যা খাদ্য এবং পানিয় গ্রহণের মাধ্যমে পাওয়া যায় এবং খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে প্রাপ্ত এই শক্তি দিয়ে আমারা দৈনন্দিন কাজ-কর্ম করি। এক এক মানুষের ভিন্ন ভিন্ন ধরণ, বয়স এবং শারীরিক পরিশ্রমের মাত্রা অনুযায়ী ক্যালরি গ্রহনের মাত্রায় পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।
তাই বিষয়গুলি বিবেচনা করে, শুধু শেফ নয় স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আপনার জন্য দৈনিক কতটুকু ক্যালরি গ্রহন করা উচিত তা অবশ্যই প্রত্যেকের জানা উচিত। শুধু তাই নয়, আপনার দৈনিক ক্যালোরি চাহিদা জানার পর তা পূরণের জন্য কোন ধরণের খাদ্য খাওয়া উচিত তা ঠিক করে নিতে হবে। সবচেয়ে ভাল হয় যদি আপনি দৈনন্দিন খাবারের উপর একটি ক্যালরি চার্ট প্রস্তুত করতে পারেন।
ক্যালরি কি, ব্যক্তি ভেদে এক এক মানুষের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় কতটুকু ক্যালরি থাকা উচিত, এর চেয়ে কম-বেশী হলে কি হবে, কি কি স্বাস্থ্যকর খাবার দিয়ে এই চাহিদা মেটানো যায় – এসব বিষয়ের উপর কিছু প্রয়োজনিয় তথ্য উপস্থাপনের চেষ্টা করব।
ক্যালরি কি | Calories :
প্রতিটি মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য ক্যালরি প্রয়োজন অনস্বীকার্য।
মানুষের লিঙ্গ, বয়স, আকার এবং তার কাজ-কর্মের ধরণ ভেদে এক এক জনের দৈনিক ক্যালরি চাহিদা এক রকম নয়। প্রত্যেকেরই দৈনিক ভিন্ন ভিন্ন পরিমানের ক্যালরি চাহিদা খাদ্যের সাথে পূরণ করতে হয়।
ফাস্ট-ফুডের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের মত দেশেও প্রায় ১১% ক্যালরি গ্রহণ করা হয় যা স্বাস্থ্যসম্মত নয়।
উচ্চ ক্যালরি বিশিষ্ট খাদ্যের পুষ্টিমান যদি কম হয় অর্থাৎ যদি সেখানে ক্যালরি ব্যাতীত অন্য কোন পুষ্টি উপাদান না থাকে, তাহলে তা empty বা শূন্য ক্যালরি হিসেবে বিবেচিত।
ক্যালরি কি বা ক্যালোরি কাকে বলে?
অধিকাংশ মানুষই ক্যালরিকে শুধু খাদ্য ও পানিয় এর সাথে সম্পর্কিত বলে ভেবে থাকে। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে যেকোন পদার্থ যা শক্তি ধারণ করে তার ক্যালরি থাকবে। যেমন ১ কেজি কয়লা ৭,০০০,০০০ ধারণ করে।
ক্যালরি কত প্রকার | TRypes Of Calories ?
ক্যালরি সাধারণত: দুই প্রকার।
Small ক্যালরি (cal): এই ক্যালরি বলতে – ১ গ্রাম পানির তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উন্নিত করতে যে পরিমান শক্তির প্রয়োজন হয় তাকে বুঝায়।
Large ক্যালরি (Kcal): ১ কিলোগ্রাম পানির তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উন্নিত করতে যে পরিমান শক্তির প্রয়োজন হয় তাকে Kcal বা বড় ক্যালরি বলে। এর আর একটি নাম হল কিলোক্যালরি।
এই বড় এবং ছোট ক্যালরি অনেক সময় সমঅর্থক শব্দে ব্যবহৃত হয় যা বিভ্রান্তিকর। একটি খাদ্য পণ্যের লেবেলিং-এ যে ক্যালরির পরিমান উল্লেখ থাকে তাকে কিলোক্যালরি বুঝানো হয়। যেমন ধরুন- একটি ২৫০ ক্যালরির চকলেট বারে বাস্তবিক অর্থে ২৫০,০০০ ক্যালরি থাকে।
খাদ্যের সাথে কত ক্যালরি গ্রহণ করা উচিত?
তাহলে, ক্যালরি কি ও কত প্রকার বিষয়টি উপরের আলোচনা থেকে আশা করি ইতোমধ্যে একটি ধারণা পেয়ে গেছেন।
এবাবে, খাদ্যের সাথে আপনি দৈনিক কত ক্যালরি গ্রহণ করবেন তার উপর বিশেষজ্ঞ মহলের তথ্যের ভিত্তিতে যা জানা যায়-
একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষের জন্য দৈনিক গড়ে ২৭০০ kcal এবং
একজন মহিলার জন্য দৈনিক গড়ে ২২০০ kcal প্রয়োজন হয়।
তবে, দৈনিক ক্যালরি গ্রহণের মাত্রা বিভিন্ন মানুষের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন পরিমানে হয়। সবার জন্য একরকম নয়।
যেমন, ব্যক্তি ভেদে আমাদের বিপাকিয় কার্যক্রম বা metabolic activity বিভিন্ন রকম হয়। যার ফলে শক্তি ক্ষয়ের মাত্রাও মানুষ থেকে মানুষে পার্থক্য হয়।
এছাড়া, কিছু মানুষ এমন থাকে যারা অন্য মানুষের তুলনায় শারীরিকভাবে অধিক কর্মমুখর জীবন-যাপনে অভ্যস্ত। ফলে, শারীরিক পরিশ্রম বেশী হওয়ার কারণে তার ক্যালরি গ্রহনের পরিমানও অধিক হবে। এটাই স্বাভাবিক।
একজন মানুষের দৈনিক কত ক্যালরি যুক্ত খাদ্য গ্রহণ করা প্রয়োজন তা নিচের বিষয়গুলির উপর নির্ভর করে –
- ব্যক্তি বিশেষের সার্বিক স্বাস্থ্য;
- দৈহিক কাজ-কর্মের পরিমান;
- পুরুষ না মহিলা অর্থাৎ লিঙ্গ;
- দৈহিক ওজন;
- উচ্চতা;
- দেহের আকৃতি; ইত্যাদির উপর।
আপনার দৈনিক কত ক্যালরি প্রয়োজন?
আমরা ইতোমধ্যে জেনেছি, দৈনিক ক্যালরি গ্রহণের পরিমান এক এক ব্যক্তির জন্য এক এক রকম হয়। তা নির্ভর করে কোন মানুষের বয়স, দৈহিক ওজন, দৈহিক উচ্চতা, ও দৈনিক কি পরিমান পরিশ্রম করে তার উপর।
তবে, বিএমআই (BMI) সূচক মতে প্রথমেই যে বিষয়টি জেনে নেওয়া দরকার তা হলো আপনার দৈহিক ওজন স্বাভাবিক কিনা। যদি স্বাভাবিকের চেয়ে কম হয়, তাহলে দৈনিক ক্যালরি গ্রহণের পরিমান বাড়াতে হবে।
আর যদি, আপনার দৈহিক ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী হয়, তাহলে ক্যালরি গ্রহনের পরিমান কমাতে হবে।
আবার, বিএমআই সূচক মতে আপনার দৈহিক ওজন স্বাভাবিক থাকলে তা বজায় রাখার জন্য নির্দিষ্ট পরিমানে ক্যালরি গ্রহন করতে হবে। যাতে কম বেশী না হয়।
বিএমআই মান জেনে নেওয়ার পর দৈহিক ওজন বাড়ানো, কমানো বা ধরে রাখার জন্য আপনার লক্ষ্য স্থির করতে হবে।
আপনি জেনে খুশি হবেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ, USDA কর্তৃক প্রণীত MyPlate Plan নামের এপ্লিকেশনের সাহায্যে আপনি খুব সহজেই আপনার জন্য নির্ধারিত দৈনিক ক্যালরির পরিমান জেনে নিতে পারেন। এর জন্য সেই এপ্লিকেশনে আপনার দৈহিক ওজন, উচ্চতা, লিঙ্গ এবং বয়স ইত্যাদি তথ্যগুলি ইনপুট দিতে হবে।
তাহলে, আপনি জেনে গেছেন- আপনার জন্য দৈনিক কত ক্যালরি প্রয়োজন।
ক্যালরির সাথে স্বাস্থ্যগত বিষয়ের সম্পর্ক কি ?
পৃথিবীতে বেচে থাকার জন্য আমাদের ক্যালরির প্রয়োজন। ক্যালরি বা শক্তি ছাড়া শরীরের কোষগুলো মারা যায়। হৃদযন্ত্র এবং ফুসফুস তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবেনা। শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও জীবন বাচিয়ে রাখার মৌলিক কাজ-কর্ম সম্পাদানে ব্যর্থ হয়ে যাবে। আমরা এই শক্তি পানিয় ও খাদ্যের মাধ্যমে পাই।
ক্যালরি কি এবং এর কিছু আনুষঙ্গিক বিষয়গুলি আলোচনার পর এর সাথে স্বাস্থগত বিষয়ের কোন সম্পর্ক আছে কিনা তা নিয়ে কথা বলছি।
আপনার শরীর এবং দৈনন্দিন কর্মকান্ডের ধরণ অনুযায়ি দৈনিক যে পরিমান ক্যালরি প্রয়োজন হয়, আপনি যদি সে অনুযায়ি নির্ধারিত পরিমানে পরিমানে খাদ্য গ্রহণ করেন তাহলে আপনি সুস্বাস্থ্যের অধিকারি হতে পারবেন। নির্ধারিত পরিমানের চেয়ে যদি আপনি খুব বেশী বা কম ক্যালরি গ্রহণ করেন তা অবশেষে আপনার স্বাস্থ্যগত সমস্য তৈরি করবে।
খাদ্যে ক্যালরির সংখ্যা আপনাকে বলে দিবে খাদ্যটি কি পরিমান স্থিতি শক্তি ধারণ করে। কথাটির অর্থ আরোও পরিস্কার করে বলতে গেলে – এখানে শুধু ক্যালরিই গুরত্বপূর্ণ নয় বরং যে পদার্থের মাধ্যমে ক্যালরি নেওয়া হবে সেটিও গুরত্বপূর্ণ।
নিচে তিনটি প্রধান খাদ্য উপাদানের ক্যালরি মান বলা হল-
- ১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা জাতীয় খাদ্য ধারণ করে ৪ কিলো ক্যালরি।
- ১ গ্রাম প্রোটিন বা আমিষ জাতীয় খাদ্যে ৪ কিলো ক্যালরি পাওয়া যায়।
- ১ গ্রাম ফ্যাট বা চর্বি জাতীয় খাদ্যে থাকে ৪ কিলো ক্যালরি।
একটি উদাহারণের সাহায্যে আরোও পরিস্কার হয়ে যাবে। ধরুন, একটি কাপে কয়েকটি ডিম ভেঙ্গে রাখা হল যার ওজন ২৪৩ গ্রাম। কেউ দৈনিক এই 243 গ্রাম ডিম খেয়ে কি পরিমান ক্যালরি পেতে পারে তার একটি হিসাব দেওয়া হল-
243 গ্রাম ডিমে প্রধান তিনটি খাদ্য উপাদানে ক্যালরির পরিমান নিম্নরুপ হতে পারে-
- চর্বি: ২৩.১১ গ্রাম;
- প্রোটিন: ৩০.৫২ গ্রাম;
- কার্বোহাইড্রেট: ১.৭৫ গ্রাম;
উপরে কিছুক্ষণ আগেই বলা হয়েছে যে এই তিনটি খাদ্যে প্রতি গ্রাম হিসেবে কি পরিমান ক্যালরি ধারণ করে। সে অনুযায়ি হিসেব করে ক্যালরির পরিমান আমরা নিম্নরুপভাবে পেতে পারি।
২৩.১১ গ্রাম চর্বিতে ক্যালরির পরিমান হল ২৩.১১*9 = 207.99 কিলোক্যালরি;
৩০.৫২ গ্রাম প্রোটিনে ক্যালরির পরিমান হল ২৩.১১*৪ = ১২২.০৮ কিলোক্যালরি;
১.৭৫ গ্রাম শর্করায় ক্যালরির পরিমান হল ১.৭৫*৪ = ৭ কিলোক্যালরি;
এবার আমরা বলতে পারি ২৪৩ গ্রাম কাঁচা ডিম মোট ৩৪৭ কিলোক্যালরি শক্তি ধারণ করে। যেখানে চর্বির অংশ থেকে ২০৮ kcal, প্রোটিনের অংশ থেকে ১২২ kcal এবং শর্করার অংশ থেকে ৭ kcal পাওয়া গিয়েছে।
দিনের কোন সময়ে বেশী খাবেন?
দিনের ঐ সময়কেই আপনার বেছে নেওয়া উচিত যখন খেলে আপনার শরীর খাদ্য থেকে প্রাপ্ত ক্যালরিকে সবচেয়ে ফলপ্রসুভাবে কাজে লাগাতে পারে।
Obesity জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, ৭০০ কিলোক্যালরি শক্তি ধারণসম্পন্ন সকালের একটি বড় মাপের নাস্তা হল ওজন কমানোর জন্য একটি আদর্শ খাবার। এর মাধ্যমে আপনি ডায়াবেটিস, করোনারি হৃদরোগ বা অন্য কোন হৃদরোগ এবং উচ্চ কোলেস্টেরলের ঝুঁকি কমাতে পারেন।
সকালের একটি বড় মাপের নাস্তা আপনার দৈহিক ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাতে সহায়তা করতে পারে। এই সময়ে আপনি আপনার তৃপ্তি মিটিয়ে খাবার খেলেও কোন সমস্য হওয়ার আশংকা থাকেনা। কারণ দিনের বাকী অংশে আপনার দৈনন্দিক কাজকর্মের দ্বারা এই ক্যালরিকে বার্ন করার জন্য আপনি প্রচুর সময় পাবেন।
ক্যালরি কি শীর্ষক অদ্যকার পোষ্টের শেষ পর্যায়ে চলে এলাম। এবারে empty ক্যালরি নিয়ে দু’টি কথা বলব।
Empty ক্যালরি কাকে বলে?
Empty ক্যালরি হল যে সব ক্যালরি এমন ধরণের শক্তির যোগান দেয় যার পুষ্টিমান খুব কম থাকে। যেসব খাদ্য empty ক্যালরি প্রদান করে সেখানে ফাইবার, এমাইনো এসিড, এন্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন, খণিজ লবন ইত্যাদির উপস্থিতি বস্তুত নাই বললেই চলে।
United States Department of Agriculture (USDA) কর্তৃক প্রণীত chooseMyPlate.gov নামের একটি খাদ্য ব্যবস্থাপনা টুল অনুযায়ি, empty ক্যালরি প্রধানত: solid fat বা নিরেট চর্বি এবং যোগ করা সুগার বা added sugar থেকে আসে।
Solid fat:
যদিও নিরেট চর্বি প্রকৃতিগতভাবেও অনেক খাদ্যে বিদ্যমান থাকে তথাপি বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিতে এই ধরণের চর্বি বাণিজ্যিকভাবে খাদ্য প্রক্রিয়াজাত করার সময় এবং বিশেষ কিছু খাদ্য প্রস্তুতের সময় ব্যবহার করা হয়। যেমন, butter বা মাখন হল এই ধরণের চর্বির একটি উদাহারণ।
Added sugar:
খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ইন্ডাস্ট্রিতে মিস্টি জাতীয় খাদ্য তৈরির সময় এই ধরণের সুগার আলাদাভাবে ব্যবহার করা হয়। সবচেয়ে পরিচিত added sugar এর একটি উদাহারণ হতে পারে সুক্রোজ।
সলিড ফ্যাট এবং এডেড সুগার খাদ্য এবং পানিয়কে অধিক সুস্বাদু করার কাজে প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু এই স্বাদ সমৃদ্ধ খাবার আপনাকে অধিক ক্যালরি উপহার দিবে যা পরবর্তিতে ওজন বৃদ্ধির কারণ হয়ে দাড়ায়।
কোন খাদ্যে Empty ক্যালরি বেশী থাকে?
সলিড ফ্যাট ও এডেড সুগার যে সব খাদ্যে বেশী থাকে-
আইসক্রিম,Donuts,Cookies,Pastries,Cakes ইত্যাদি।
সলিড ফ্যাট যেসব খাদ্যে বেশী থাকে-
চিজ,পিজা,সসেজ,হটডগস,রীবস,ব্যাকন,
Added সুগার যেখানে বেশী পাবেন:
ফলের জুস,এনার্জি ড্রিংকস,স্পোর্টস ড্রিংকস,সোডা ইত্যাদি।
মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের একটি তথ্য অনুযায়ি জানা যায়, যুক্তরাস্ট্রের প্রায় অর্ধেক মানুষ দৈনিক কমপক্ষে একটি করে added sugar বিশিষ্ট ড্রিংকস পান করে।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা যায় কেউ যদি দৈনিক এক গ্লাসের বেশী এই জাতীয় পানিয় পান করে তাহলে তার উচ্চ রক্তচাপ তৈরি হওয়ার ঝুকি বাড়িয়ে দিবে।
এজন্য, দায়িত্বটি আপনার। খাদ্য পছন্দের সময় কম সলিড ফ্যাট বা কম এডেড সুগার জাতীয় খাদ্য নির্বাচন করুন।
সুষম খাদ্য কাকে বলে? সুষম খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা কি?
আপনি যদি দৈহিক স্বাস্থ্য ও সুস্থতা বজায় রেখে বেঁচে থাকতে চান তাহলে নিয়মিত যে খাদ্যটি খেয়ে চলছেন তাতে খাদ্য উপাদানসমুহ যেন সুষমভাবে বন্টিত থাকে। এটি অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় নানাবিধ রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার সমুহ সম্ভাবনা থাকবে।
যাহোক, সুষম খাদ্যের সাথে খাদ্য ও পুষ্টি বিষয়াদি ওতোপ্রতভাবে জড়িত। কারণ খাদ্য বা পুষ্টি উপাদনগুলির সঠিক মাত্রার সংমিশ্রণেই খাদ্যটি সুষম কিনা তা ঠিক করা হয়।
তাই, শুধু খাদ্য খেলেই হবে না। খাদ্যটি সুষম কিনা, তা দেখার বিষয়। কেননা, খাদ্য সুষম না হলে দেহে অনেক রকম জটিলতা তৈরি হবে। বিশেষ করে পুষ্টির অভাবজনিত রোগসহ নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে।
তাই, আজকের পোষ্টে, সুষম খাদ্য কি বা সুষম খাদ্য কাকে বলে, সুষম খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা ও গুরত্ব, কিভাবে খাদ্য খেলে তা সুষম হবে, সুষম খাদ্যের উপাদান কয়টি ও কি কি, সুষম খাদ্যের তালিকা – ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।
সুষম খাদ্য কাকে বলে ? | Balanced Diet ?
যে খাদ্যে ছয়টি খাদ্য উপাদান সুনির্দিষ্ট পরিমানে ও সঠিক অনুপাতে বিদ্যমান থাকে যাতে দেহে প্রয়োজনিয় পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয় তাকে সুষম খাদ্য বলা হয়। খাদ্যের উপাদান যেমন কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, চর্বি, ভিটামিন, খনিজ লবন ও পানি সঠিক অনুপাত ও মাত্রায় সুষম খাদ্যে মিশ্রিত থাকে।
স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সুষম খাদ্যের গুরত্ব অপরিসীম। শারীরিক সুস্থতা বজায় রেখে দৈহিকভাবে কাজ কর্মে অংশ নেওয়ার জন্য যে শক্তি ও পুষ্টির প্রয়োজন হয় তা বিজ্ঞান সম্মত উপায়ে সুষম খাদ্য থেকে পাওয়া যায়।
সুষম খাদ্য খেলে, আপনার অপুষ্টিজনিত কোন রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে।
বেচে থাকার জন্য দৈনিক ভিত্তিতে আমাদের নির্দিষ্ট পরিমান ক্যালরি ও পুষ্টি গ্রহনের প্রয়োজন হয়। সুষম খাদ্য আমাদের সেই কাংখিত শক্তি ও পুষ্টি সরবরাহ করে। সুষম খাদ্যে পুষ্টি ও ক্যালরির পরিমান আমাদের দৈনিক যে পরিমান প্রয়োজন হয় সেই নির্দিষ্ট হারের চেয়ে কমও নয় এবং বেশিও নয়।
যেমন, প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের দৈনিক গড়ে প্রায় ২০০০ ক্যালরি শক্তির প্রয়োজন হতে পারে যা দৈনিক খাদ্য গ্রহনের মাধ্যমে তৈরি হয়। এই ক্যালরি চাহিদা পূরণের জন্য তার সুষম খাদ্য ঐভাবে প্রস্তুত করা হবে যেখানে মোট ক্যলরির পরিমান ২০০০ হয়।
অপরদিকে, কোন মানুষের দৈনিক যে পরিমান পুষ্টি গ্রহণের প্রয়োজনিয়তা রয়েছে, প্রস্তুতকৃত সুষম খাদ্যে ঐ নির্দিষ্ট পরিমান পুষ্টিই থাকতে হবে। এজন্যই, এটিকে সুষম খাদ্য বলা হবে।
এ প্রেক্ষাপটে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ (USDA) একটি খাদ্য পিরামিড অনুসরণের সুপারিশ করেছিল। কিন্তু পরবর্তিতে পুষ্টি বিজ্ঞান সমস্ত খাদ্যকে বিভক্ত করে পাঁচটি খাদ্য গ্রুপ তৈরি করে এবং প্রতি গ্রুপ থেকে খাদ্য নিয়ে সুষম খাদ্য তৈরি করার কথা বলে।
USDA এর সুপারিশ অনুযায়ি, কোন মানুষের খাবার প্লেটের কমপক্ষে অর্ধেক পরিমান খাদ্যে যাতে ফলমুল এবং শাক-সবজি থাকে। বাকি অর্ধেকে প্রোটিন বা দানাদার খাদ্য থাকতে পারে। এছাড়া, কম চর্বি বিশিষ্ট ডেইরি পণ্যের কথাও বলা হয়েছে।
উৎসগতভাবে, খাদ্যের মোট ক্যালরির মধ্যে সুষম খাদ্যে বিদ্যমান বিভিন্ন উপাদানের ক্যালোরি হিসাব নিম্নরুপ হতে পারে-
- কার্বোহাইড্রেট থেকে : ৬০-৭০%;
- প্রোটিন থেকে : ১০-১২%;
- চর্বি থেকে : ২০-২৫%;
সুষম খাদ্যের গুরুত্ব কি?
আপনার শরীর যাতে সঠিকভাবে কাজ করতে পারে তার জন্য যে পুষ্টি ও শক্তির প্রয়োজন তা সুনির্দিষ্ট মাত্রায় সুষম খাদ্য থেকে পাওয়া যায়। খাদ্যে পুষ্টির সুষম বন্টন না হলে বিভিন্ন প্রকার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যাবে। বিশেষ করে পুষ্টির অভাবজনিত রোগ বা অপুষ্টিজনিত রোগ। এছাড়া, সুষম খাদ্য না খেলে শরীর অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে যাবে এবং শরীরের কর্মক্ষমতা হ্রাস পাবে।
শৈশব বয়সে যদি সুষম খাদ্যের ঘাটতি থাকে তাহলে শিশুর দৈহিক বৃদ্ধি কমে যায়। মেধাবী জাতি গঠনের পথে অন্তরায় সৃষ্টি হবে। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে ফলে বার বার অপুষ্টিসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে।
এছাড়া, তারা অস্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহনে অভ্যস্ত হয়ে যাবে যা পরবর্তি সময়ে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করবে। এর সাথে যদি শরীর চর্চা না থাকে, তাহলে ওবেসিটিসহ অন্যান্য জটিল বিপাকিয় রোগ যেমন হৃদরোগ, হাই কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস ও হাই ব্লাড প্রেসারে আক্রান্ত হওয়ার সমুহ সম্ভাবনা থাকে।
সুষম খাদ্যের উপাদান কয়টি কি কি?
সুষম খাদ্য কাকে বলে – এর সঙ্গায় ছয়টি উপাদানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মোটকথা, খাদ্যে যে ছয়টি উপাদান থাকে তাই সুষম খাদ্যের উপাদান। তবে শর্ত হল, সুষম খাদ্যের বেলায় উপাদানগুলো সুনির্দিষ্ট পরিমানে ও সঠিক অনুপাতে খেতে হবে। সুষম খাদ্যের উপাদনগুলি নিম্নরুপ-
কার্বোহাইড্রেট: এ জাতিয় খাদ্য উপাদন থেকে সবচেয়ে বেশি শক্তি লাভ করা হয়। সুষম খাদ্যে এর অনুপাত ৬০-৭০% হয়ে থাকে। আমাদের দৈনিক যে পরিমান ক্যালরির প্রয়োজন হয় তার অধিকাংশই কার্বোহাইড্রেট থেকে আসে। যেমন, সম্পূর্ণ দানাদার জাতিয় খাদ্য, বাদামি চাল, বাদামি আটা ইত্যাদি।
প্রোটিন: আমাদের প্রোটিন জাতিয় খাদ্যের প্রয়োজন হয় দেহের ক্ষয়পূরণের জন্য। কোষ মারা গেলে নতুন করে কোষ তৈরিতে কাজ করে। ইহা জীবনের বিভিন্ন ধাপে আমাদের দৈহিক বৃদ্ধি সাধনে গুরত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে।
দৈনিক ক্যালরি চাহিদার প্রায় ২৫% প্রোটিন জাতিয় খাদ্য থেকে গ্রহণ করা উচিত। প্রোটিন আমরা দু’টি উৎস থেকে পাই, উদ্ভিদ ও প্রাণি। উদ্ভিদজাত প্রোটিনের ভাল উদাহারণ হল বিভিন্ন ডাল জাতিয় খাদ্য যেমন, মুসুরি ডাল, মুগ ডাল, ছোলা ইত্যাদি।
এছাড়া, beans ও nuts থেকেও উল্লেখযোগ্য পরিমানে প্রোটিন পাওয়া যায়। অপরদিকে প্রাণিজ প্রোটিনের উদাহরণ দুধ, ডিম, মাংস এবং এদের দিয়ে উৎপাদিত খাদ্য পণ্য।
ফ্যাট বা চর্বি : সুষম খাদ্যে চর্বি জাতিয় খাদ্য দৈনিক ক্যালরি চাহিদার ১৫% পূরণে অবদান রাখে। এরা ভিটামিন ও হরমোন তৈরিতে ভূমিকা রাখে। এর ভাল উৎস হল পলি আনসেচুরেটেড ফ্যাট যেমন ফ্ল্যাক্স বীজ, সান ফ্লাওয়ার বীজ ইত্যাদি।
এছাড়া মনো আনসেচুরেটেড ফ্যাট এর মধ্যে অলিভ ওয়েল, sesame oil থেকেও চর্বির চাহিদা মেটানো যায়। সম্পৃক্ত বা স্যাচুরেটেড চর্বির মধ্যে ঘি, মাখন ইত্যাদির ব্যবহার লক্ষ করা যায়।
ভিটামিন ও মিনারেলস: মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট হিসাবে ভিটামিন-মিনারেলের যথেষ্ট গুরত্ব রয়েছে। দেহের ভিতর এর মেটাবলিজম কাজে সহায়তা করে এবং স্নায়তন্ত্রের স্নায়ু কোষের সঠিক কার্য সম্পাদানে কাজ করে।
ফলমুল ও শাক-সবজি হল প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন-মিনারেলস এর সবচেয়ে ভাল উৎস। যেমন, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-বি, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-ডি, ভিটামিন-ই, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন ইত্যাদি মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট আমাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য খুব দরকারি।
পানি: জীবনের অপর নাম পানি। পানির গুরত্ব সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই। তবে, মুল বিষয় হল, প্রাপ্ত বয়স্ক একজন মানুষের জন্য দৈনিক সর্ব নিম্ন যে পরিমান পানি (কমপক্ষে ৮ গ্লাস) পান করতে বলা হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।
সুষম খাদ্যের উপাদান কয়টি ও কি কি – তার আলোচনায় যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্টের মাধ্যমে জানানোর অনুরোধ করছি।
সুষম খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা কি?
আপনার দেহের সুস্বাস্থ্য ধরে রাখার জন্য সুষম খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা অনেক। কারণ, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ও কোষ-কলার সঠিক কার্য সম্পাদনের জন্য পুষ্টির ছয়টি উপাদানই সঠিক মাত্রায় নিয়মিত সরবরাহ করা প্রয়োজন।
আপনার খাদ্যটি যদি সুষম না হয় তাহলে প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাবে দেহে পুষ্টির অভাবজনিত রোগসহ বিভিন্ন ধরণের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে। বিশেষ করে শিশুদের বেলায় তাদের দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি থেমে যাবে, শরীরের অরগানগুলো সঠিকভাবে তৈরি হতে পারেনা।
ফলে, তারা শারীরিকভাবে অসমর্থ হতে পারে, বড় হলে তাদের দিয়ে কাংখিত কাজ আশা করা কঠিন হয়ে যেতে পারে। তাছাড়া, তারা স্বাস্থকর নয় এমন খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত হয়ে উঠলে বড় হলে তা সহজে পরিবর্তন করা যাবেনা।
এজন্য, আপনার শিশুর শৈশব কাল থেকেই সুষম খাদ্যের দিয়ে স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণে অভ্যস্ত করে গড়ে তুলতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন, সুষম খাদ্যের ধারণা মতে পাঁচটি খাদ্য গ্রুপের সমন্বয়ে একটি সুন্দর খাদ্য পরিকল্পনা যা নিয়মিতভাবে খেয়ে যেতে হবে।
দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে সুষম খদ্যের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। খদ্যের হজম প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে বিপাকিয় কাজ ত্বরান্বিত করার কাজেও সুষম খাদ্যের দরকার রয়েছে। এছাড়া, আপনার দেহের মাত্রাতিরিক্ত ওজন হ্রাসে এবং দৈহিক ওজন স্বাভাবিক পর্যায়ে বজায় রাখার ক্ষেত্রে এর ভূমিকা রয়েছে।
এক কথায় বলতে গেলে, আপনি যে বয়সেই হন না কেন, আপনার স্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্য নির্দিষ্ট পরিমানে খাদ্যে ছয়টি উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত সুষম খাদ্য নিয়মিত খেয়ে যেতে হবে।
সুষম খাদ্য কেন প্রয়োজন তা নিচে উল্লেখিত সুষম খাদ্যের উপকারিতা থেকে বুঝা যায়-
- ওবেসিটি দুর করে স্বাভাবিক ওজন বজায় রাখতে সহায়তা করে।
- বিপকিয় রোগসহ অন্যান্য রোগ যেমন ওবেসিটি, কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ, ট্রাইগ্লিাসারাইড, হৃদরোগ ইত্যাদি রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহয্য করে।
- ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনায় কাজ করে।
- হৃদরোগ এবং স্ট্রোক প্রতিরোধে কাজ করে।
- পরবর্তি বংশধরের দেহ গঠনে কাজ করে।
- স্মৃতি শক্তির উন্নতি সাধন করে।
- মানসিক প্রশান্তি আনায়ন করে।
কিভাবে সুষম খাদ্য পেতে পারি?
সুষম খাদ্য কাকে বলে – সঙ্গা অনুযায়ী, একটি স্বাস্থ্যকর সুষম খাদ্যে নিম্নলিখিত খাদ্য উপাদান থাকা প্রয়োজন-
- ভিটামিন, মিনারেলস এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট;
- কার্বোহাইড্রেট যেখানে শ্বেতসার ও ফাইবারও অন্তর্ভুক্ত;
- প্রোটিন,
- স্বাস্থ্যসম্মত চর্বি,
- পানি
এছাড়া, পাঁচটি খাদ্য গ্রুপ থেকে সুষম খাদ্যে নিচের খাদ্যগুলিও থাকতে হবে-
ফলমুল,শাক-সবজি,Grains বা দানাদার খাদ্য,দুগ্ধজাত খাদ্য,আমিষ জাতিয় খাদ্য, ইত্যাদি।
আমিষ বা প্রোটিন জাতিয় খাদ্যের উদাহারন হল, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, nuts, beans এবং লিগিউমস।
ভেজিটারিয়ান বা সবজি ভোগি মানুষেরা প্রাণিজাত খাদ্যের পরিবর্তে সম্পূর্ণরুপে উদ্ভিদজাত খাদ্যের উপর নির্ভরশীল থাকে। তারা যেমন মাছ, মাংস, ডিম না খেলেও এর মধ্যে যে পুষ্টি উপাদান থাকে তা উদ্ভিদজাত উৎস হতে পেয়ে যায়। যেমন, উদ্ভিদজাত উৎসের মধ্যে beans, tofu ও nuts এর মাধ্যমে আমিষের চাহিদা পূরণ করা হয়।
সুষম খাদ্যের তালিকা
ব্যালেন্সড ডায়েট এর মাঝে পুষ্টি উপাদানের সঠিক পরিমানের সাথে সাথে নির্দিষ্ট পাঁচটি খাদ্য গ্রুপ থেকে খাদ্যসমুহের উপস্থিতিও নিশ্চিত করতে হবে।
আপনি নিচের খাদ্য বা পুষ্টি উপাদানের সমন্বয়ে সুষম খাদ্যের তালিকা তৈরি করতে পারেন।
শাক সবজি: যেমন সবুজ পাতা বিশিষ্ট শাক, স্টার্চ জাতীয় সবজি, লিগিউমস, লাল ও কমলা রঙের সবজি ইত্যাদি।
ফলমুল: টাটকা ফলমুল যেমন, কমলা, আপেল, কলা, বেদেনা, আঙ্গুর, আমলকি, পেয়ারা ইত্যাদি। আপনার দৈনিকের খাদ্য তালিকায় ফলমুল নিয়মিতভাবে রাখতে হবে।
দানাদার খাদ্য: দানাদার খাদ্যের মধ্যে মুলত চাউল ও আটার ব্যবহার সবচেয়ে বেশী। তবে, এক্ষেত্রে দেখতে হবে – এই দানাদার খাদ্যটি যাতে পরিশোধিত না হয়। মানে হলো, পুরো শষ্যটি ভাঙ্গিয়ে হোক বা যেভাবেই হোক খেতে হবে। ছাকনির মাধ্যমে দানাদার খাদ্যের ফাইবার যেন ফেলে দেওয়া না হয়। কারণ, খাদ্যে ফাইবারের যথেষ্ট উপকারিতা থাকে।
আমিষ বা প্রোটিন: যেমন, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ইত্যাদি। বয়স ভেদে আপনার দৈনিক যে পরিমান প্রোটিন গ্রহনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে তা পুরো করতে হবে। সাধারণত: একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষের বেলায় দৈনিক প্রোটিনের প্রয়োজন ৫০-৬০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে।
দুগ্ধজাত খাদ্য: যেমন কম চর্বির দুধ, দধি, পনির ইত্যাদি।
সুনির্দিষ্ট পরিমানে উপরে উল্লেখিত খাদ্য গ্রুপ থেকে নিয়মিতভাবে আপনাকে খাদ্য গ্রহন করতে হবে। যা সুষম খাদ্যের তালিকা হিসাবে বিবেচিত।