খাদ্য নিরাপত্তা কী? পার্সোনাল হাইজিন ও কিচেন সেফটি | Food Hazard | Personal Hygiene | Kitchen Safety:

খাদ্য নিরাপত্তা | ফুড হাইজিন কি | পার্সোনাল হাইজিন ও কিচেন সেফটি ? 

খাদ্য নিরাপত্তা কী? পার্সোনাল হাইজিন ও কিচেন সেফটি
ফুড হাইজিন কি,কিচেন সেফটি,খাদ্য ঝুঁকি কি,

খাদ্য সুরক্ষা এই আশ্বাসকে বোঝায় যে খাবারটি যখন তার পছন্দসই ব্যবহার অনুযায়ী প্রস্তুত করা হয় বা খাওয়া হয় তখন ভোক্তার ক্ষতি করে না । খাদ্য সুরক্ষা, যা মানব স্বাস্থ্যের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত একটি বিষয়, খাদ্যজনিত রোগ ও আহত রোধের জন্য খাদ্য প্রস্তুত, প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং সংরক্ষণের রুটিনগুলিকে বোঝায়। 

আজ, খাবারের পণ্যগুলি আমাদের টেবিলগুলিতে না পৌঁছানো পর্যন্ত কয়েক ডজন পর্যায় অতিক্রম করে এবং এই পণ্যগুলি পুরো পুরো প্রক্রিয়া জুড়েই অনেকগুলি স্বাস্থ্য বিপদের মুখোমুখি হতে পারে। খাবারগুলি গ্রাহকদের ক্ষতি করতে না পারে এবং  এই ঝুঁকি কমাতে নিরাপদ খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতি এবং পদ্ধতিগুলি খাদ্য উৎপাদন জীবনযাত্রার প্রতিটি পর্যায়ে প্রয়োগ করা হয়।

একটি বৈজ্ঞানিক শৃঙ্খলা হিসাবে, খাদ্য সুরক্ষা রসায়ন, মাইক্রোবায়োলজি এবং ইঞ্জিনিয়ারিং সহ একাডেমিক ক্ষেত্রের বিস্তৃত আকর্ষণ করে। এই বিভিন্ন চিন্তার পদ্ধতিগুলি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য একত্রিত করে যেখানেই খাদ্য পণ্যগুলি সোর্স করা হয়, উত্পাদিত হয়, প্রস্তুত করা হয়, সংরক্ষণ করা হয় বা বিক্রি করা হয়।  এই অর্থে, খাদ্য সুরক্ষা স্বাস্থ্যবিধি এবং জবাবদিহিতার একটি নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতি যা বিশ্ব খাদ্য শিল্পের প্রতিটি বিষয়কেই উদ্বেগীত করে।
খামার থেকে শুরু করে কারখানায় এবং তারপরে গ্রাহকের টেবিল পর্যন্ত, খাদ্য পণ্যগুলি সরবরাহের চেইনে ভ্রমণ করার সাথে সাথে বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখোমুখি হয়।

এই ঝুঁকিগুলি রোধ করতে এবং ভোক্তাদের যাতে ক্ষতি না করা হয় তা নিশ্চিত করতে, খাদ্য উত্পাদন জীবন চক্রের প্রতিটি পর্যায়ে নিরাপদ খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মানদণ্ড প্রয়োগ করা প্রয়োজন।
খাদ্য পণ্য বিশ্বের সর্বাধিক ব্যবসায়ের পণ্যগুলির মধ্যে একটি। প্রতিবছর যেমন বাজারগুলি আরও বেশি বিশ্বব্যাপী হয়ে ওঠে এবং বিশ্বের জনসংখ্যা বাড়তে থাকে, বিশ্বব্যাপী খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খলা কেবলমাত্র স্কেল এবং জটিলতায় বৃদ্ধি পেতে থাকবে দিন দিন । 

প্রতিটি জাতি খাদ্য সুরক্ষা নিয়ন্ত্রণের জন্য নিজস্ব আইন এবং প্রয়োগের অনুশীলনগুলি সংজ্ঞায়িত করে এবং প্রতিষ্ঠিত করে এবং এই বিধিগুলি দেশ থেকে দেশভেদে এবং দেশীয়ভাবে অঞ্চলভেদে পৃথক হতে পারে। 

হাইজিন কত প্রকার ও কি কি

ফুড হাইজিন কি ?

স্বাস্থ্যবিধি শব্দটি মূলত ইংরেজি পারিভাষিক শব্দ 'হাইজিন' এর প্রতিরূপ। ১৬৭৬ সনে প্রথম ইংরেজি ভাষায় hygiene শব্দটি নিয়ে আসা হয় ফ্রেঞ্চ ভাষার  hygiène (হাইজিয়েন) থেকে যা মূলত গ্রিক শব্দ ὑγιεινή (τέχνη) (হিউজিনে টেখনে) এর ল্যাটিন রূপ যার অর্থ "স্বাস্থ্যকলা বা স্বাস্থ্যকো"। গ্রীক ভাষায় এরকম ব্যবহার লক্ষ করা যায়, ὑγιεινός(হিউজিয়াস) যার অর্থ "স্বাস্থ্যের জন্য ভাল বা স্বাস্থ্যকর" এটি ὑγιής (হিউজীস) শব্দের সমার্থকরূপে ব্যবহৃত হয় যার অর্থও স্বাস্থ্যকর,উপকারী, পথ্য প্রাচীন গ্রীকপুরাণে, Ὑγίεια (হাইজিয়া) বলে স্বাস্থ্য, পরিচ্ছন্নতা এবং স্বাস্থ্যবিধির মনুষ্যরূপ (ঔষুধ দেবতা আস্ক্লেপিউসের সন্তান-সন্ততি) বোঝানো হত। ফুড হাইজিন বলতে খাদ্য স্বাস্থ্যবিধি বুঝায়। খাদ্যের কোনো প্রকার পরজীবি বা জীবাণুবিহীন নিরাপদ হস্তান্তর ও প্রস্তুত করা থেকে শুরু করে খাদ্য সংরক্ষণের সকল ধাপগুলোকে বুঝায় সংরক্ষণ করাকেও বোঝায়। যা আমাদেরকে সর্বোত্তমভাবে সকল প্রকার খাদ্যজনিত রোগ বালাই থেকে আমাদের শরীরকে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি থেকে বাচায়। এর মধ্যে এমন ধরনের সকল অভ্যাসগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যা পণ্য বা কাচামালের উৎপাদন ক্ষেত্র থেকে শুরু করে।


HACCP | হ্যাসাপ কি ?

HACCP হ্যাসাপ হচ্ছে ফুড সেফটি মেনেজমেন্ট সিস্টেম। যা অনুসরণ করে, খাবারের সকল প্রকার ঝুকি থেকে বাচিয়ে রাখা যায়। সকল প্রকার ক্ষতির হাত থেকে খাবারকে রক্ষা করে। এই সিস্টেমের মূল লক্ষ্য হচ্ছে খাবারের সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং খাবারকে বিক্রেতার কাছ থেকে ভোক্তা পর্যন্ত নিরাপদ পৌছানো। 

HACCP এর পূর্ণরুপ হচ্ছে "হ্যাজার্ড এনালাইসিস ক্রিটিকাল কন্ট্রোল পয়েন্ট "। এই সিস্টেমটিকে এমন ভাবে বানানো হয়েছে এতে ফুড ইন্ডাস্ট্রীর গ্রোউইং, হারভেস্টিং,প্রসেসিং, ম্যানুফেকচারিং, ডিস্ট্রিবিউটং এবং মার্চেন্ডাইজিং সহ সকল ধাপেই এটার ব্যবহার বাধ্যতামূলক। ১৯৭০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে, পিলসবেরি কোম্পানি, নাসা এবং ইউ. এস আর্মির মিলিত প্রচেষ্টায় এই সিস্টেমটিকে বানানো হয়। মহাকাশ গবেষণার জন্য সর্ব প্রথম ইউ.এস আর্মি সাথে খাবার নিয়ে স্পেসশিপে যাওয়ার জন্য এবং বেশিদিন খাবারটিকে নিরাপদ ও দীর্ঘদিন ভালো রাখার জন্য এই পদ্ধতিটি আবিষ্কার করেন।

What is Food Hazard ? Type of Hazard ?

খাদ্য ঝুঁকি কি ?

বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে সেটাই হচ্ছে ঝুঁকি। ঝুঁকি বলতে আমরা সাধারণত কোনো কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভবনাকে বুঝে থাকি। কিন্তু কালিনারি আর্ট বা ফুড সেফটি মেনেজমেনন্ট  বা হোটেল ইন্ড্রাটিস এর ভাষায় ঝুঁকি বলতে যেকোনো ধরনের খাবারের ক্ষতির সম্ভবনাকে বোঝায় যা ইংরেজি তে ফুড হ্যাজার্ড বলে। খাবারের বিভিন্ন রকমের ঝুঁকি রয়েছে। 

খাদ্য ঝুঁকির ধরন কি ? 
জৈবিক, রাসায়নিক, শারীরিক দূষণ এবং উৎপাদনের সময় কিছু অসদাচরণের কারণে খাদ্য নিরাপত্তা প্রভাবিত করে বিপত্তি। ঝুঁকি বিশ্লেষণে প্রধান ঝুঁকিগুলি নিম্নরূপ: আরো জানবো হাইজিন কত প্রকার ও কি কি 

১। Biological hazard বা জৈবিক ঝুঁকি কাকে বলে ?

জৈবিক স্বাস্থ্যের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, পরজীবী , ম্যাক্রোপারাসাইট, প্রোটোজোয়ান এবং ছাঁচ বা ছত্রাক । খাবার খাওয়া যখন এরা পেটে যায় তখন তারা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। এগুলি খাদ্যে বিষক্রিয়া, টিটেনাস, শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ বা পরজীবী সংক্রমণের মতো অসুস্থতার কারণ হতে পারে।মাইক্রোবায়োলজিক্যাল বিপদগুলি সবচেয়ে বড় খাদ্য নিরাপত্তার হুমকিগুলির মধ্যে একটি এবং শুধুমাত্র একটি পরীক্ষাগার সেটিংসে সনাক্ত করা যেতে পারে। 

খাদ্যে মাইক্রোবিয়াল বিপদের মধ্যে রয়েছে ব্যাকটেরিয়া যেমন সালমোনেলা, বিভিন্ন ভাইরাস এবং পরজীবী। প্রতি বছর, লক্ষ লক্ষ মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং হাজার হাজার মানুষ দূষিত খাদ্য গ্রহণের কারণে ডায়রিয়াজনিত রোগে মারা যায়।

খাদ্য নিরাপত্তা বিপন্ন করতে পারে এমন কয়েক ডজন কারণের মধ্যে, সবচেয়ে মারাত্মক হল দূষণের ঝুঁকি এবং এতে রয়েছে মাইক্রোবিয়াল বিপদ, মাইকোটক্সিন উৎপাদনকারী ছাঁচ, প্রোটোজোয়া, ভাইরাস এবং প্রাইনের পাশাপাশি খাবারে ব্যাকটেরিয়া।

রাসায়নিক এবং শারীরিক বিপদের তুলনায়, মাইক্রোবায়োলজিক্যাল বিপদের উত্থান খাদ্য উৎপাদন এবং প্রক্রিয়াকরণের সময় বিভিন্ন কারণ এবং প্রভাবের উপর নির্ভর করে।

খাদ্য নিরাপত্তা এমন একটি সমস্যা যা সরাসরি মানুষের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে এবং খাদ্য শৃঙ্খলের বিভিন্ন পর্যায়ে ঝুঁকি প্রতিরোধ, কমিয়ে আনা বা দূর করা এবং ভোক্তাদের চাহিদা মেটাতে উচ্চমানের খাদ্য বজায় রাখা, সরবরাহ করা এবং বিতরণ করা প্রয়োজন

২। Physical hazards বা শারীরিক ঝুঁকি কাকে বলে ?

খাদ্যের মধ্যে কাচ, কাঠ,পাথর, চুল, ধাতু, প্যাকেজিং উপাদান এর উপস্থিতিকে শারীকিক ঝুঁকি বা বলা হয়। খাদ্যে শারীরিক বিপদগুলি প্রায়ই অনিচ্ছাকৃত দূষণ বা দুর্বল খাদ্য পরিচালনার অভ্যাসের ফলে হয়। উদাহরণস্বরূপ, চুল, নখ, নখের পালিশ, ধুলো, মাটি, ক্ষয়প্রাপ্ত বা চিপানো পাত্র, ধাতব অংশ এবং পাত্র থেকে ছিটকে পড়া ময়লা শারীরিক বিপদের উৎস।

শারীরিক ঝুঁকি হ'ল খাবারের পদার্থে যে কোনও বিদেশী বস্তু যা গ্রাহকরা অসুস্থ বা আহত হয়। এই বিদেশী বিষয়গুলির মধ্যে হাড়ের টুকরো, ধাতব টুকরো, পণ্য প্যাকেজিংয়ের টুকরো, ধূলিকণা এবং পাথরের টুকরো, কাঁচ বা কাঠের টুকরো, মরা পোকামাকড় বা অন্যান্য বিদেশী পদার্থ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে তবে সীমাবদ্ধ নয়, যা সাধারণত খাবারে পাওয়া যায় না should পণ্য।

নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি, কাঁচামাল পরিদর্শন, মেটাল ডিটেক্টর, হাড়ের টুকরো সনাক্ত করার জন্য এক্স-রে প্রযুক্তি, কার্যকর কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ, প্রতিরোধমূলক সরঞ্জাম রক্ষণাবেক্ষণ এবং উপযুক্ত স্যানিটেশন পদ্ধতিগুলি খাদ্যে শারীরিক বিপদ রোধ করার জন্য প্রয়োগ করা উচিত।


৩। Chemical hazard বা রাসায়নিক ঝুঁকি কাকে বলে ?

খাবারে ডিটারজেন্ট এবং জীবাণুনাশক, খাদ্য সংযোজন, হরমোন, এলার্জি যৌগ, পশুচিকিত্সা ওষুধ, অ্যান্টিবায়োটিক, কীটনাশক এবং বিষাক্ত ওষুধ, ভিবিন্ন ক্লিনিং এজেন্ট, মিশ্রণ করাকে রাসায়নিক বিপদ বা বলা হয়।  

খাবার নষ্ট হওয়ার মূল কারণ হলো জীবাণু। জীবাণু হলো এমন ক্ষুদ্র প্রাণী যা খাবারে প্রবেশ করে খাবারের স্বাদ, গন্ধ, এবং পুষ্টিগুণ নষ্ট করতে পারে। জীবাণুর মধ্যে রয়েছে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, এবং ছত্রাক।

খাবারে জীবাণু প্রবেশ করতে পারে বিভিন্ন উপায়ে। জীবাণু খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, পরিবহন, এবং সংরক্ষণের সময় খাবারে প্রবেশ করতে পারে। জীবাণু খাদ্য বিক্রেতা বা খাবারের বিক্রেতার হাত থেকেও খাবারে প্রবেশ করতে পারে।

জীবাণু খাবারে প্রবেশ করার পর খাবারের উপাদানগুলিকে বিপাক করে খাবারের স্বাদ, গন্ধ, এবং পুষ্টিগুণ নষ্ট করে। এছাড়াও, জীবাণু খাবারে বিষাক্ত পদার্থ তৈরি করতে পারে যা খাবার খেলে মানুষের অসুস্থতা বা মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

খাবার নষ্ট হওয়া বা পচনের কারণ কী কী ?

সহায়ক উপাদানগুলো হলো-

১। খাদ্যের উপাদান | যথা- শর্করা, আমিষ বা প্রোটিন, স্নেহপদার্থ, ভিটামিন বা খাদ্যপ্রাণ, খনিজ লবণ এবং জল।

২। আর্দ্রতা | আর্দ্রতা হল বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ । বাতাসে প্রচুর জলীয় বাষ্প থাকলে আর্দ্রতা বেশি হবে।

৩। তাপ বা  টেম্পারেচার | তাপ এক প্রকার অদৃশ্য শক্তি, যা ঠান্ডা বা গরমের অনুভূতি জন্মায়। যার প্রভাবে কোনো বস্তু ঠান্ডা বা গরম অনুভূত হয় তাই তাপ। তাপ

৪ । অক্সিজেন অক্সিজেন | খাবারে অক্সিজেন থাকলে খাবার নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

বিভিন্ন ধরনের অণুজীব বেঁচে থাকার জন্য দরকার অনুকূল পরিবেশ যা উপরোক্ত উপাদান হতে পাওয়া যায়। খা
প্রধান কারণ ৩টি। যথা-দ্য দ্রব্য নষ্ট হওয়ার


১। অণুজীবের আক্রমণ : ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ও মোল্ড-এর আক্রমণে খাদ্যবস্তর পচন ঘটে।

আর বাঘ ও স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ অণুজীবের বংশ বিস্তারে সহায়ক। এমন পরিবেশে খাদ্যদ্রব্য দ্রুত পচে ঘায়।

২। এনজাইমের ক্রিয়া : মাছ, মাংস, শাকসবজি ও ফলমুলসহ সব ধরনের খাদ্যবন্ত থেকে অনবরত বিভিন্ন

ধরনের এনজাইম নিঃসৃত হয়। এসব এনজাইমের ক্রিয়ায় খাদ্যদ্রব্য দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়।

ও। রাসায়নিক বিক্রিয্লা চর্বিজাতীয় খাদ্যবস্তর অক্িজেনের উপস্থিতিতে জারণ ঘটে এবং নষ্ট হয়ে কালো

দাগ সৃষ্টি করে। ফলমূল, শাকসবজিসহ বিভিন্ন খাদ্যবস্তুতে বিদ্যমান ধাতব আয়ন (52,793, 0037, 0%2-)-এর উপস্থিতিতে

প্রভাবকীয় জারণ ঘটে এবং পচে নষ্ট হয়ে যায়। আবার খাদ্যদ্রব্য আর্রবিশ্লেষিত হয়ে নষ্ট হয়ে যায়।

খাবার নষ্ট হওয়া রোধের পদক্ষেপগুলি কি কি:

খাবার সঠিকভাবে প্রক্রিয়াকরণ এবং সংরক্ষণ করা উচিত।

খাবার পরিষ্কার এবং শুষ্ক হাত দিয়ে তৈরি এবং পরিবেশন করা উচিত।

খাবার ঠান্ডা এবং অন্ধকার জায়গায় সংরক্ষণ করা উচিত।

খাবারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে তা খাওয়া উচিত।

খাবার নষ্ট হওয়ার লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:
খাবারের রঙ, গন্ধ, বা স্বাদে পরিবর্তন

খাবারে পচা বা অসুস্থ গন্ধ

খাবারে ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি

খাবার নষ্ট হয়ে গেলে তা খাওয়া উচিত নয়। খাবার নষ্ট হয়ে গেলে তা ফেলে দেওয়া উচিত।

Cooking Temperature:

খাবার রান্না করার তাপমাত্রা কত ?

  • সিদ্ধ করা | Boiling ১০০ degrees Celsius
  • সিমারিং | Simmering ৯৫-৯৮ degrees Celsius
  • স্টিমিং | Steaming ১০০ degrees Celsius
  • ব্লাঞ্চিং | Blanching ১০০ degrees Celsius in Water
  • পোচিং | Poaching ৬৫-৮০ degrees Celsius in Stove
  • ব্রেজিং করা | Braising ১৮০-২০০ degrees Celsius in Meats
  • স্টুইং | Stewing ৯৫-৯৮ degrees Celsius
  • ডুবো তেলে ফ্রাইং | Deep-fat frying ১৬০-১৮০ degrees Celsius
  • বেকিং | Baking ১৪০-২৩৫ degrees Celsius
  • রোস্টিং | Roasting ১৮০-২২০ degrees Celsius
  • গ্রিলিং | Grilling ১৯০-২৪০ degrees Celsius
  • গ্র্যাটিনেট | Gratinating ২৪০-২৮০ degrees Celsius
  • সাউটিং | Sauteing ১৬৫-২০০ degrees Celsius
  • প্যান ফ্রাইং | Pan frying ১৬৫ degrees Celsius

Personal Hygiene :

শেফদের ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা ও সাবধানতা :

স্বাস্থ্যসম্মত খাবার প্রস্তুতকরণ ও পরিবেশনের পূর্বশর্ত হচ্ছে রন্ধনকারীর ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা।
ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বলতে একান্তভাবে তার নিজস্ব পরিচ্ছন্ন থাকার বিষয়টি বোঝানো হয়েছে। এক্ষেত্রে নখ,
চুল, দাঁতের পরিচ্ছন্নতা থেকে পরিধেয় বস্ত্র, ব্যক্তিগত সুস্থতা, কাজ করার সময় পরিচ্ছন্নতার প্রতি
সচেতনতা ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত।

রন্ধনকারী রান্নার সময় পরিচ্ছন্নতা ও সাবধানতা রক্ষায় যেসব উপায় অবলম্বন করবেন সেগুলো নিম্নরূপ :

-রান্নার কাজ শুরুর পূর্বে সাবান দিয়ে হাত ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।

-হাতের নখ বড় হলে তাতে ময়লা জমে। রান্নার সময় সেসব ময়লা খাবারের মাধ্যমে খাদ্যগ্রহণকারীর শরীরে প্রবেশ করতে পারে। তাই রুখনকারীর নথ যথাসম্ভব ছোট রাখতে হবে।
রান্নাঘরে নানা ধরনের কাজ করা হয়। কোনো ময়লা জিনিস ধরার পর অথবা হাত দিয়ে মাথা,

-শরীরের যে কোনো স্থান চুলকানোর পর কখনো সাবান দিয়ে হাত না ধুয়ে খাবার স্পর্শ করা ঠিক নয়।

-হাতে যদি ঘা, চর্মরোগ থাকে তাহলে খুব সহজেই রোগজীবাণু খাদ্যে সংক্রমিত হয়। এ অবস্থায়
খাবার রান্না বা পরিবেশন করা উচিত নয়।

-রন্ধনকারীর চুল ভালোভাবে বেঁধে নিতে হয়। তা না হলে খাবারের উপর তা পড়তে পারে। আবার
চুল খোলা থাকলে কিংবা ফিতা ঝোলানো থাকলে আগুন লেগে যেতে পারে।


- রন্ধনকারীর পোশাক পরিচ্ছদ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়া বাঞ্ছনীয়। যে পোশাকই হোক না কেন তা
যেন জীবাণুমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন হয়।

-পরিধেয় পোশাক যেন ঢিলে-ঢালা না হয়। এতে ওড়নায় কিংবা আঁচলে আগুন লেগে যেতে পারে।

-রান্না করার সময় বারবার হাত ধোয়া হয়। এই ধোয়া হাত মোছার জন্য একটা নির্দিষ্ট গামছা বা
তোয়ালে থাকা প্রয়োজন। তা না হলে পরিধেয় পোশাকে মুছলে পোশাক নোংরা হবে কিংবা
পোশাকের ময়লা খাবারে যাবে।

-যতটুকু সম্ভব রান্নাঘরে কিচেন এপ্রোন পরার অভ্যাস করা উচিত। এতে পরিধেয় পোশাক ভালো
থাকে এবং রান্না ঘরের নিরাপত্তা বজায় থাকে।

-শেফ দের হাতে গ্লাভস ব্যবহার করাই ভালো।


Kitchen Safety:

রান্না করার সময় সতর্কতা

রান্নাঘরে শেফ বা গৃহিনী বা রন্ধনকারীকে আগুন, কাটা বাছায় ধারালো যন্ত্রপাতি ও রান্নার বিভিন্ন ধাতব সাজসরঞ্জাম
নিয়ে কাজ করতে হয় । আমাদের দেশের রান্নাঘরগুলো তেমন প্রশস্ত হয় না। রান্নাঘরের অপরিসর আয়তনে
উত্তপ্ত পরিবেশে রান্নার ব্যস্ততায় অসতর্ক হওয়া মাত্র যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটা অসম্ভব নয়। রান্নাঘরে সাধারণত
যেসব দুর্ঘটনা ঘটে সেগুলো হচ্ছে- পুড়ে যাওয়া, কেটে যাওয়া, পিছলে যাওয়া ইত্যাদি।

পুড়ে যাওয়া-

সরাসরি জ্বলন্ত চুলা থেকে দাহ্য বস্তুতে আগুন লেগে পুড়ে যেতে পারে। শাড়ির আঁচল, ওড়না, চুলের ফিতায়
অসাবধানতাবশত আগুন লেগে তা শরীরে ছড়িয়ে পড়লে শরীর, হাত, মুখ পুড়ে যেতে পারে। রান্নার তেল:
ছিটকে হরহামেশাই পুড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে।


এসব দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য যেসব সাবধানতা 


-রান্না করার সময় চুল, শাড়ির আঁচল, ওড়না আঁটসাঁট করে পরিপাটি করে নেওয়া উচিত।

-রান্নার পর চুলা সম্পূর্ণরূপে নিভিয়ে ফেলতে হবে। দিয়াশলাইয়ের কাঠি কখনো জ্বলন্ত অবস্থায়
ফেলা উচিত নয়।

-রান্নাঘরের গ্যাসের লাইন, ইলেকট্রিক লাইন ত্রুটিমুক্ত কিনা মাঝে মাঝে পরীক্ষা করে নেওয়া
প্রয়োজন।

-গ্যাসের চুলায় আগুন ধরানোর পূর্বে রান্নাঘরের জানালা খুলে নিতে হয়। - তা না হলে গ্যাস
লিকেজে আগুন প্রজ্বলিত হয়ে রান্নাঘরে আগুন লেগে যাওয়ার ভয় থাকে। চুলা থেকে হাড়ি
নামানো বা নাড়ানোর জন্য গরম প্রতিরোধক কাপড়ের তৈরি মোটা প্যাড বা লোহার বেড়ি
ব্যবহার করতে হয় ।

-কখনো তেলের কড়াইয়ে উচ্চতাপ প্রয়োগ করতে নাই এতে আগুন লেগে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আগুন
লাগলে পানি না ঢেলে ঢেকে দিলে আগুন নিভে যায়। এক্ষেত্রে কখনোই পানি দেওয়া উচিত নয় ।

কাটা জনিত দুর্ঘটনা – কারণ ও সাবধানতা :


রান্নাঘরে আরও একটি সাধারণ দুর্ঘটনা হলো কেটে যাওয়া। কাটার কাজ করার সময় ছুরি, বটি দিয়ে হাত
কেটে যেতে পারে। যথাস্থানে দা-বটি না রাখা হলে অসতর্ক মুহূর্তে কেটে যাওয়ার মতো দুর্ঘটনা ঘটে।

অনেক সময় ভাঙা কাচের পাত্র, জং ধরা টিন, ভাঙা প্লাষ্টিকের ঢাকনা এলুমিনিয়াম বা অন্যান্য ভাঙা
হাঁড়ি-পাতিলের কোণা লেগে হাত কেটে যায়। যেখানে লাকড়ির চুলা ব্যবহার করা হয় সেখানে লাকড়ি কিংবা
তার কাঁটার খোঁচায় হাত কাটতে পারে।

এক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বনের উপায় হচ্ছে-

শেফরা কাটার সরঞ্জামগুলো কাজ শেষ করার পর নির্দিষ্ট স্থানে গুছিয়ে রাখতে হবে। অবশ্যই যদি বাসায় হয় তাহলে ছোট ছেলেমেয়েদের নাগালের বাইরে রাখতে হবে।

কাটার সরঞ্জামগুলোর ধার এমন হওয়া উচিত যাতে কাটার কাজে বেগ পেতে না হয়। এক্ষেত্রে
ছোট-বড় ভিন্ন ভিন্ন ধারালো ছুরি-বটির ব্যবস্থা থাকা দরকার।


• ত্রুটিপূর্ণ, ভাঙা হাঁড়ি-পাতিল ও কাটার সরঞ্জাম বাদ দিতে হবে।

কাচের জিনিস ভেঙে গেলে হাত দিয়ে নয় বরং ঝাড়ু দিয়ে ময়লার ট্রেতে তুলে ডাস্টবিনে ফেলতে হবে।

পিছলে পড়া

রান্নাঘরের মেঝেতে পানি, মাড়, তরকারির খোসা প্রভৃতি পড়ে থাকলে কাজের সময় অসাবধানতাবশত
পিছলিয়ে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। এর ফলে হাত, পা বা কোমরে চোট পাওয়া, মাথা ফাটা কিংবা শরীরের যে কোনো অংশের হাড় ভাঙার মতো মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

সতর্কতামূলক বিষয়গুলো হচ্ছে-


রান্না ও কাটা বাছার কাজ শেষ করে অপ্রয়োজনীয়, উচ্ছিষ্ট অংশ সরিয়ে ফেলে স্থানটি পরিষ্কার
করে ফেলতে হবে।

ভাতের মাড়, তেল, ধোয়ার কাজে ব্যবহৃত পানি মেঝেতে পড়ার সাথে সাথেই মুছে ফেলতে হবে।
রান্নাঘর সবসময় শুকনা রাখতে হবে।

রান্নায় ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি রান্নাঘরে ছড়িয়ে থাকলে হোঁচট খেয়ে পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে। তাই
কাজ শেষে এগুলো গুছিয়ে ফেলতে হবে যাতে পায়ে বেঁধে না যায়।
রান্নঘর গুঁড়া সাবান, গরম পানি দিয়ে ঘষে নিলে রান্নাঘরের মেঝে পিচ্ছিল হয় না।

মনে রাখা উচিত গৃহিনী বা রন্ধনকারীর সতর্কতাই রান্নাঘরের দুর্ঘটনা প্রতিরোধের অন্যতম উপায়।

হাইজিন কত প্রকার ও কি কি

Post a Comment

Previous Post Next Post