Hotel Organizational Chart Intro | হোটেল ম্যানেজমেন্ট কোর্স:
হোটেল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ও কোর্স |
আপনি যদি হোটেল ম্যানেজমেন্ট সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাহলে আপনাকে একটি ভাল প্রতিষ্ঠানের অধীনে শিক্ষা প্রাপ্ত করতে হবে। হোটেল ম্যানজেমেন্ট কোর্স করতে আপনি তিনটি প্রধান অংশে ভাগ করতে পারেন।
- সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোর্স।
- বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কোর্স।
- বাইরের দেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়।
হোটেল ম্যানেজমেন্ট কলেজ ও প্রতিষ্ঠানগুলি শিক্ষার্থীদেরকে সাধারণত নিম্নলিখিত বিষয়গুলিতে শিক্ষা প্রদান করেঃ
১; ব্যাচেলার ইন্ হসপিট্যালিটি ম্যানেজমেন্ট
২; ১-বছরের হোটেল ম্যানেজমেন্ট ডিপ্লোমা
৩; ব্যাচেলার ইন্ হোটেল ম্যানেজমেন্ট আ্যন্ড ক্যাটারিং টেকনোলোজি
৪; ৩-বছরের হোটেল ম্যানেজমেন্ট, ক্যাটারিং ও ফুড সায়েন্স ডিপ্লোমা
৫; বি-এস.সি ইন্ হসপিট্যালিটি আ্যন্ড হোটেল আ্যডমিনিস্ট্রেশন
৬; বি.এ (অনার্স) ইন্ হসপিট্যালিটি ম্যানেজমেন্ট
৭; ৩-বছর সম্পূর্ণকালীন হোটেল ম্যানেজমেন্ট ও ক্যাটারিং টেকনোলোজি ডিপ্লোমা
৮; বি.এ ইন্ হসপিট্যালিটি ম্যানেজমেন্ট
৯; ৩-বছরের হোটেল ম্যানেজমেন্ট, ক্যাটারিং টেকনোলোজি ও ট্যুরিজম ডিপ্লোমা
১০; বি.এ ডিগ্রী কোর্স ইন্ ইন্ট্যারন্যাশনাল হসপিট্যালিটি ম্যানেজমেন্ট
১১; ব্যাচেলার ইন্ হোটেল ম্যানেজমেন্ট
১২; ১-বছরের পি.জি.ডি.এইচ.এম (পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন্ হোটেল ম্যানেজমেন্ট)
১৩; ৬-মাসের সার্টিফিকেট কোর্স ইন্ হোটেল ম্যানেজমেন্ট
শেফ জাহেদ এর মতে যোগ্যতার মানদন্ড ভিন্ন-ভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন হয়। তবে হোটেল ম্যানেজমেন্ট-এর স্নাতকে অধ্যয়নের জন্য ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ১০+২ উত্তীর্ণ হওয়া প্রয়োজন।
হোটেল ম্যানেজমেন্টের ডিপ্লোমা কোর্সে কি কি পড়তে হয় ?
এই কোর্সে যে যে বিষয়ে ধারণা দেওয়া হয়, তা হল –
- Hotel maintenance
- Front office operation
- Hotel and catering law
- Health and hygiene
- Basic food production
- Basic food and beverage service
- Accommodation operation
- Principles of accounting
- Financial Management
- Sales and Marketing ইত্যাদি।
হোটেলের বিভিন্ন অংশ বা বিভাগ Hotel Departments | Hotel Organizational Chart:
হোটেল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম:
হোটেলের অংশ বা বিভাগ সংজ্ঞায়িত হয় পদ্ধতির ভিন্নতার কারণে। একটি পদ্ধতিতে হোটেলের সকল বিভাগকে রাজস্ব কেন্দ্র (Revenue Center) ও যোগান কেন্দ্র (Supporting) এই দুভাগে ভাগ করা যায়।
রাজস্ব কেন্দ্র হচ্ছে হোটেলের ফ্রন্ট অফিস ও ফুড এন্ড বেভারেজ সার্ভিস বিভাগ এবং যোগান কেন্দ্র হচ্ছে হাউজকিপিং, ইঞ্জিনিয়ারিং, কিচেন, সিকিউরিটি, সেলস্ এন্ড মার্কেটিং, হিউম্যান রিসোর্স, ফাইন্যান্স বিভাগ। এই পদ্ধতিটি ব্যবহার হয় হোটেলের হিসাবরক্ষণ কাজে এবং এর সর্ম্পক সম্পত্তির মজুদকরণ ও তথ্য পদ্ধতির সাথে। রাজস্ব কেন্দ্র পণ্য বা সেবা বিক্রি করে হোটেলের জন্য রাজস্ব আনয়ন করে। যোগান কেন্দ্র সরাসরি রাজস্ব আনয়ন করে না কিন্তু রাজস্ব কেন্দ্রকে সহযোগিতা করে রাজস্ব আনয়নে ভূমিকা রাখে।
বিভিন্ন বিভাগ ও তাদের কর্মচারীদের সম্পৃক্ততার ভিত্তিতেও সকল বিভাগকে সম্মুখভাগের কর্মী বিভাগ ও নেপথ্য কর্মী বিভাগ এই দু’ভাগে ভাগ করা যায়। সম্মুখভাগের কর্মী বিভাগ হচ্ছে যারা সব সময় অতিথির সেবায় বিশেষ করে কথা-বার্তা, অতিথি যোগাযোগ ব্যবস্থাপনায় সরাসরি ভুমিকা রাখে ও নেপথ্য কর্মী বিভাগ হচ্ছে যারা পিছনে থেকে অতিথি সেবায় ভূমিকা রাখে। হাউজকিপিং বিভাগ রুমের অতিথিদের সাথে প্রায়ই সরাসরি যোগাযোগ হলেও তারাও নেপথ্য কর্মী বিভাগ হিসেবে কাজ করে থাকে।
বৈশিষ্ট্য সূচক ভাবে বৃহত্তম হোটেলগুলোতে নিম্মলিখিত বিভাগ দেখা যায় তাদের পরিচালনার ভিন্নতার কারণে -
হোটেলের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের বা বিভাগ এর নাম ও বর্ণনা :
জি.এম (G.M):-
একটি হোটেলের জি.এম বা মহা-ব্যবস্থাপক হচ্ছেন ঐ হোটেলের মূল ব্যক্তিত্ব। তিনি নেতৃত্ব, উদ্যোক্তা, পরীক্ষণ, ধারণা, ব্যক্তিত্ব, সংযোগ রক্ষাকারী, মুখপাত্র, বিশৃঙ্খলা রোধ, সম্পদের সম্ভাবনা সন্ধানে দক্ষতা, কথাবার্তা চালানো ইত্যাদি উপাদনের সমন্বয়ে সময়ের অংশ ব্যবহার করে হোটেলের ব্যবস্থাপনা সুচারুভাবে সম্পন্ন করেন। তিনি হোটেলের নীতি-নির্ধারণী ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রধান হিসেবে কাজ করেন। হোটেল বাণিজ্যের সম্পূর্ণ দায়-দায়িত্ব ও ব্যবস্থাপনা উনার কর্মদক্ষতার উপর নির্ভরশীল। হোটেলের ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণ, প্রাতিষ্ঠানিক উন্নতি ও হোটেলের বাণিজ্য বজায় রাখার উপর উনার কাজের নীতির সাফল্য নির্ভর করে। উনি হোটেলের মূলধন ঠিক রেখে মালিককে সকল প্রকার দায়-দেনা থেকে মুক্ত রাখেন। তিনি তার অধিন্যাস্ত বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানদের ও সহযোগীদের সমন্বয়ে তার দায়িত্ব পালন করে থাকেন। তিনি তার কাজের জন্য সরাসরি মালিক বা মালিকের মনোনীত ব্যক্তির র কাছে জবাবদিহি করেন।
ফ্রন্ট অফিস (Front Office) বিভাগঃ
আধুনিক হস্পিট্যালাটি ব্যবস্থাপনায় ফ্রন্ট অফিসকে হোটেলেন স্নায়ু কেন্দ্র, মেরুদন্ড, কর্মের কেন্দ্রস্থল, আয়না, আলোর মিলনবিন্দু ইত্যাদি নামে ডাকা হয়। অতিথি অর্ভ্যথনা থেকে শুরু করে অতিথির পরিপূর্ণ সন্তুষ্টি পর্যন্ত সকল সেবার কেন্দ্রবিন্দু ও আর্š—-যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ফ্রন্ট অফিস কাজ করে। হোটেলের আকার, স্থান ও মানের উপর নির্ভর করে ফ্রন্ট অফিস সংগঠিত হয়। ফ্রন্ট অফিস ম্যানেজার এ বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা। তিনি হোটেলের নীতি-নির্ধারণী ব্যবস্থাপনা কমিটির অধিষ্ঠিত ব্যক্তিবর্গের সমষ্টির মধ্যে দ্বিতীয় বা তৃতীয় সদস্য হিসেবেও কাজ করে থাকেন। তিনি তার অধিন্যাস্ত হোটেল ভেদে সহকারী ফ্রন্ট অফিস ম্যানেজার, ডিউটি ম্যানেজার, লবি ম্যানেজার, গেষ্ট সার্ভিস ম্যানেজার, টিম লিডার, সুপারভাইজার, ফ্রন্ট অফিস এক্সিকিউটিভ, টেলিফোন অপারেটর, ট্যুর ডেস্ক এক্সিকিউটিভ, কন্সিয়্যাস্, বেল বয় ও সহযোগীদের সমন্বয়ে তার দায়িত্ব পালন করে থাকেন। গেষ্ট চেক্-ইন, রেজিষ্টেশন, রিজার্ভেশন, গেস্ট-স্টে, চেক্-আউট, ক্যাশিয়ারিং, নাইট অডিট চেক্, আর্ন্ত-বিভাগ যোগাযোগ রক্ষাকারী, সকল প্রকার তথ্য প্রদানকারী হিসেবে হোটেলের সেবা বা পণ্য বিক্রয় করে থাকেন। তিনি তার কাজের জন্য সরাসরি আবাসিক ম্যানেজার বা জি.এম এর কাছে জবাবদিহি করেন।
হাউজকিপিং (Housekeeping) বিভাগ:
হাউজকিপিং বিভাগকে হোটেলের হৃদয় বলা হয়ে থাকে। একে ২৪/৭ সার্ভিস সেন্টারও বলা হয়। প্রতিষ্ঠানের সব স্থানকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, সাজানো-গোছানো, সুন্দর ও ভালভাবে রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে এটি দেখতে ও চমৎকার উপলব্দিবোধ জাগ্রত করে সবাইকে থাকতে, বেড়াতে এবং সেখানে কাজ করার আগ্রহ তৈরী করা এ বিভাগের কাজ। এক্সিকিউটিভ হাউজকিপার বা হাউজকিপিং ম্যানেজার এ বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা। তিনি হোটেলের নীতি-নির্ধারণী ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হিসেবেও কাজ করে থাকেন। তিনি তার অধিন্যাস্ত হোটেল ভেদে সহকারী হাউজকিপার, লন্ড্রি ম্যানেজার,বিভিন্ন সুপারভাউজার ও সহযোগীদের সমন্বয়ে তার দায়িত্ব পালন করে থাকেন। তিনি তার কাজের জন্য সরাসরি আবাসিক ম্যানেজার বা জি.এম এর কাছে জবাবদিহি করেন।
ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ (Engineering Department) :
ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগকে হোটেলের ইঞ্জিনিয়ার বলা হয়ে থাকে। প্রতিষ্ঠানের সব স্থান, জিনিস, আসবাবপত্র,যন্ত্রপাতি, ভৌত কাঠামো সুন্দর ও ভালভাবে রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে এটি দেখতে ও চমৎকার উপলব্দিবোধ জাগ্রত করে সবাইকে থাকতে, বেড়াতে এবং সেখানে কাজ করার আগ্রহ তৈরী করা এ বিভাগের কাজ। চিফ ইঞ্জিনিয়ার বা মেইনটেন্যাস ম্যানেজার এ বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা। তিনি হোটেলের নীতি-নির্ধারণী ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হিসেবেও কাজ করে থাকেন। তিনি তার অধিন্যাস্ত হোটেল ভেদে সহকারী ইঞ্জিনিয়ার, বিভিন্ন সুপারভাউজার ও সহযোগীদের সমন্বয়ে তার দায়িত্ব পালন করে থাকেন। তিনি তার কাজের জন্য সরাসরি জি.এম এর কাছে জবাবদিহি করেন।
সিকিউরিটি (Security) বিভাগ:
সিকিউরিটি বিভাগকে হোটেলের বডিগার্ড বলা হয়ে থাকে। হোটেেেল আগত অতিথিদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, রুমের জিনিসপত্রের নিরাপত্তা, প্রতিষ্ঠানের ভিতর-বাহিরের সব স্থান, জিনিস, আসবাবপত্র,যন্ত্রপাতি, ভৌত কাঠামো, পার্কিং এলাকার সকল গাড়ী বাহিরের চোর, ডাকাত, অসাধু কর্মচারী থেকে রক্ষা ও নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহন করার মাধ্যমে এটি দেখতে ও চমৎকার উপলব্দিবোধ জাগ্রত করে সবাইকে থাকতে, বেড়াতে এবং সেখানে কাজ করার আগ্রহ তৈরী করা এ বিভাগের কাজ। চিফ সিকিউরিটি অফিসার এ বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা। তিনি হোটেলের নীতি-নির্ধারণী ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হিসেবেও কাজ করে থাকেন। তিনি তার অধিন্যাস্ত হোটেল ভেদে সহকারী সিকিউরিটি অফিসার, বিভিন্ন সুপারভাউজার ও সহযোগীদের সমন্বয়ে তার দায়িত্ব পালন করে থাকেন। তিনি তার কাজের জন্য সরাসরি জি.এম এর কাছে জবাবদিহি করেন।
ফুড ও বেভারেজ (F&B) বিভাগ:
আধুনিক হোটেল ব্যবস্থাপনায় হোটেলে আগত অতিথিদের রানার ঘর থেকে রান্নাকৃত খাদ্য ও বার থেকে পানীয় পরিবেশন অতিথি সেবার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যেখানে এ খাদ্য পরিবেশন করা হয়,তাকে রেষ্টুরেন্ট ও যেখানে পানীয় পরিবেশন করা হয়, তাকে বার বলা হয়ে থাকে।শেফ জাহেদ এর মতে খাদ্য ও পানীয় পরিবেশন বা সার্ভিসের এ দুইটি অংশকে একত্রে ফুড ও বেভারেজ বিভাগ বলা হয়ে থাকে। ফুড ও বেভারেজ ম্যানেজার এ বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা। তিনি হোটেলের নীতি-নির্ধারণী ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হিসেবেও কাজ করে থাকেন। তিনি তার অধিন্যাস্ত হোটেল ভেদে সহকারী ফুড ও বেভারেজ ম্যানেজার, রেষ্টুরেন্ট ম্যানেজার, বার ম্যানেজার, বেন্কুইট ম্যানেজার, ক্যাটারিং ম্যানেজার, রুম সার্ভিস ম্যানেজার, সুপারভাইজার, ক্যাপ্টেন, বারটেন্ডার, ওয়েটার ও সহযোগীদের সমন্বয়ে তার দায়িত্ব পালন করে থাকেন। তিনি তার কাজের জন্য সরাসরি জি.এম এর কাছে জবাবদিহি করেন।শেফ জাহেদ এর লেখা পড়ছেন আপনি।
কিচেন বা ফুড প্রোডাকশন্ বিভাগ (Kitchen or Food Production Department):
আধুনিক হোটেল ব্যবস্থাপনায় হোটেল আগত অতিথিদের রানাঘর থেকে রান্নাকৃত খাদ্য ও বার থেকে পানীয় পরিবেশন অতিথি সেবার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যেখানে এ খাদ্য রান্না করা হয়, তাকে কিচেন বলা হয়ে থাকে। কিচেন রুমকে হোটেলের ইঞ্জিন রুমও বলা হয়ে থাকে আর এ বিভাগের প্রধান একজিকিউটিভ শেফ। তিনি হোটেলের নীতি-নির্ধারণী ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হিসেবেও কাজ করে থাকেন। তিনি তার অধিন্যাস্ত সহকারী হোটেল ভেদে , সু শেফ, বেন্কুইট শেফ, সিডিপি শেফ পেস্টি শেফ, কমি শেফ, ষ্টুয়াট ও সহযোগীদের সমন্বয়ে তার দায়িত্ব পালন করে থাকেন। তিনি তার কাজের জন্য সরাসরি ফুড ও বেভারেজ ম্যানেজার বা জি.এম এর কাছে জবাবদিহি করেন ।
সেলস্ ও মার্কেটিং বিভাগ (Sales & Marketing Department):
আধুনিক হোটেল ব্যবস্থাপনায় হোটেলের অবস্থান, দাম, সেবা, সুনাম, জি.এম, সেফ ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে হোটেলের প্রচার-প্রচারণা করা হয় ও তার উপর ভিক্তি করে অতিথিদের প্রভাবিত করা হয় ঐ হোটেলের সেবা গ্রহন করতে। আর এই কাজগুলিকে সেলস্ ও মার্কেটিং বলা হয়। মার্কেটিং এর কাজ হল প্রচার করা ও সেলস্ এর কাজ হল বিক্রয় করা। হোটেলের প্রচার ও বিক্রয় কর্মকান্ড পরিচালিত সেলস্ ও মার্কেটিং বিভাগ নামে। এ বিভাগের প্রধান সেলস্ এন্ড মার্কেটিং ম্যানেজার। তিনি হোটেলের নীতি-নির্ধারণী ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য হিসেবেও কাজ করে থাকেন। তিনি তার অধিন্যাস্ত হোটেল ভেদে মার্কেটিং ম্যানেজার, সেলস্ ম্যানেজার, ব্যান্ড ম্যানেজার, রিজার্ভেশন ম্যানেজার, সহকারী ম্যানেজার ও সহযোগীদের সমন্বয়ে তার দায়িত্ব পালন করে থাকেন। তিনি তার কাজের জন্য সরাসরি জি.এম বা মালিকের কাছে জবাবদিহি করেন।
ফাইন্যান্স্ বা একাউন্টিং বিভাগ (Finance or Accounting Department):
আধুনিক হোটেল ব্যবস্থাপনায় হোটেলের একাউন্ট পেবল, একাউন্ট রিসিভাবল, ক্রেডিট, নাইট অডিট, পেরোল ইত্যাদি যে বিভাগ পরিচালনা করে তাকে ফাইন্যান্স্ বা একাউন্টিং বিভাগ বলা হয়ে থাকে। এ বিভাগকে হোটেলের ব্যাংকও বলা হয়ে থাকে।এ বিভাগের মূল দায়িত্ব হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের সকল আর্থিক কার্যাবলী পর্যবেক্ষণ করা। এ বিভাগের প্রধান ফাইন্যান্স্ বা একাউনটিং ম্যানেজার। তিনি হোটেলের নীতি-নির্ধারণী ব্যবস্থাপনা কমিটির অধিষ্ঠিত ব্যক্তিবর্গের সমষ্টির মধ্যে দ্বিতীয় বা তৃতীয় সদস্য হিসেবেও কাজ করে থাকেন। তিনি তার অধিন্যাস্ত হোটেল ভেদে ফাইন্যান্স ম্যানেজার, একাউন্ট ম্যানেজার, কষ্ট্ কন্টোলার, পার্সেস্ ম্যানেজার, ষ্টোরকিপার, সহকারী ম্যানেজার ক্যাশিয়ার, ও সহযোগীদের সমন্বয়ে তার দায়িত্ব পালন করে থাকেন। তার কাজের মূল চাবি হচ্ছে তার অধীন সবাইকে বিশ্বাস করা। তিনি তার কাজের জন্য সরাসরি জি.এম বা মালিকের কাছে জবাবদিহি করেন।
হিউম্যান রির্সোস বিভাগ (Human Resource Department): আধুনিক হোটেল ব্যবস্থাপনায় হোটেলের এমপ্লঈমেন্ট, এমপ্লঈ বেনিফিট, এমপ্লঈ রিলেশন, ট্রেনিং ইত্যাদি যে বিভাগ পরিচালনা করে তাকে হিউম্যান রির্সোস বিভাগ বলা হয়ে থাকে। এ বিভাগের প্রধান হিউম্যান রির্সোস ম্যানেজার। তিনি হোটেলের নীতি-নির্ধারণী ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও আইনগত পরামর্শক হিসেবেও কাজ করে থাকেন। সঠিক কর্মচারী নিয়োগ করে আইনত ও হতে পারে এমন সকল ঝুঁকি থেকে তিনি জি.এম এর মাধ্যমে মালিককে রক্ষা করেন। তিনি তার অধিন্যাস্ত হোটেল ভেদে ট্রেনিং ম্যানেজার, বেনিফিট ও রিলেশন্ ম্যানেজার, সহকারী ম্যানেজার ও সহযোগীদের সমন্বয়ে তার দায়িত্ব পালন করে থাকেন। তিনি তার কাজের জন্য সরাসরি জি.এম বা মালিকের কাছে জবাবদিহি করেন।
কোর্স সম্পূর্ণ হওয়ার পর চাকরির কী সুযোগ রয়েছে :
সাধারণত শিক্ষার্থীদের হোটেল ম্যানেজমেন্টে স্নাতক পাশের পর প্রতিষ্ঠান থেকে ক্যাম্পাসিং এর সুযোগ দেওয়া করে দেওয়া হয়। শহরের নামকরা হোটেলগুলিতে কাজ করার সুযোগ পেয়ে থাকেন শিক্ষার্থীরা। হোটেল ম্যানেজমেন্ট পাশের পর চাকরির ক্ষেত্র অনেক বেশি। শেফ, হোটেল ম্যানেজার, ইভেন্ট ম্যানেজার,গেস্ট রিলেশন, ক্লাইন্ট রিলেশন, ক্যাটারিং ম্যানেজার, অ্যাকমোডেশন ম্যানেজার-সহ আরও অনেক ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে শিক্ষার্থীরা নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার সুযোগ পেয়ে থাকেন। হোটেল ম্যানেজমেন্ট কোর্স সম্পূর্ণ করার পর বাংলা বা ভারত ছাড়াও বাইরের দেশেও চাকরির চাহিদা বিপুল।শিক্ষার্থীরা ভারতের বাইরে নানা হোটেলেও আবেদন করে চাকরি করতে পারেন। এ ছাড়া, জাহাজেও চাকরি করার সুযোগ থাকে এক জন হোটেল ম্যানেজমেন্ট কোর্স সম্পূর্ণ করা শিক্ষার্থীর। তবে, সে ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সময় আগে শিক্ষার্থীকে এক থেকে দেড় বছরের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে হয়।
হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়ে আয়-রোজগার কেমন :
ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করে কাজ শুরু করতে হবে শিক্ষানবিশ হিসেবে। এ সময় তারকা হোটেলগুলো থেকে যাতায়াত ভাড়া বাবদ কিছু টাকা দেওয়া হয়। তবে সব হোটেলে একই রকম নিয়ম নেই। মূলত প্রতিষ্ঠান ও কাজ ভেদে বেতন কাঠামো ভিন্ন হয়।
শিক্ষানবিশ শেষে শুরুতে বেতন ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা হয়ে থাকে। অভিজ্ঞদের বেতন ৩৫ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এ ছাড়া কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে লভ্যাংশের একটা অংশও কর্মচারীদের দেওয়া হয়।