সিলেটের ঐতিহ্যবাহী তুশা শিন্নি রেসিপি | Tusha Shinni Recipe

সিলেটের ঐতিহ্যবাহী তুশা শিন্নি রেসিপি | Bangladeshi Halwa Recipe 
তুশা শিন্নি রেসিপি

তুশা শিন্নি  !

তুশা শিন্নি এক প্রকার ময়দার হালুয়া। নামটি সিলেট অঞ্চলের । তুশা শিন্নি হচ্ছে সিলেট অঞ্চলের খুবই জনপ্রিয় খাবার। সিলেটি রন্ধনশৈলীর এই খাদ্যটি সামান্য মশলাযুক্ত, নরম এবং মিষ্টি স্বাদের। এটি একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার যা বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বহুল প্রচলিত।এর মূল উপকরণ ময়দা, পানি, চিনি, গোলাপজল প্রভৃতি ।বিশেষ করে শাব-এ -বরাত এর দিনে এটি সিলেটীরা  বেশি পরিমানে তৈরি করে থাকে। 

এই হালুয়াটি বাংলাদেশের সিলেটে খুবই জনপ্রিয়..তারা এই হালওয়াটিকে সিলেটীরা "তুশা শিন্নি" বলে ডাকে ।

ইয়েমেন দেশ থেকে এসেছিলেন হযরত শাহজালাল (রঃ), তার সঙ্গে আরও ৩৬০ আউলিয়া এসেছিলেন। যারা থেকে গিয়েছিলেন এই পূণ্যভূমি সিলেটেই। ধারণা করা হয় যে, তাদের সাথেই মধ্যপ্রাচ্য থেকে এই রন্ধন প্রণালী আসে সিলেট অঞ্চলে। বাংলাদেশের বেশিরভাগ জায়গাতেই বুটের ডালের হালুয়া, বেশনের হালুয়া, সুজির হালুয়া তৈরি করা হয়ে থাকে । মূলত শবে বরাতের সময়ই হালুয়া তৈরির প্রচলন হয়। তবে তুশা শিন্নি সিলেটের বাইরে খুবই কম প্রচলিত। ‘হালুয়া’ খাদ্য রীতিটাই এসেছে মধ্যপ্রাচ্য বা মধ্য এশিয়া থেকে। সিলেট অঞ্চলে শবে বরাতে মসজিদে মসজিদে শিন্নি বিতরণ বা আত্মীয়দের বাড়িতে পাঠানো হয় তুশা শিন্নি । এটি বানাতে গেলে ১০ মিনিটের বেশি সময় লাগবে না।

 চলুন দেখে নেওয়া যাক, কীভাবে তৈরি করবেন মজাদার তুশা শিন্নি বা ময়দার হালুয়া। 


তুশা শিন্নি তৈরির উপকরনঃ 


১.ময়দা- আড়াই কাপ 

২.চিনি-২ কাপ 

৩.পানি-৩ কাপ 

৪.দারচিনি-৪ টি

৫.এলাচ-৬ টি 

৬.তেজপাতা-৪ টি 

৭.কিচমিচ-১/৩ কাপ

৮.চিনাবাদাম-১/৪ কাপ 

৯.তেল-১ কাপ 

১০.ঘি-আধা কাপ । 


তুশা শিন্নি তৈরি রান্নার পদ্ধতিঃ 

প্রথমে তুশা শিন্নি বানানোর জন্য চিনির সিরা বানাতে একটি হাঁড়িতে পরিমান মতো পানি ও তাতে চিনি দিয়ে দিতে হবে । কারন ময়দা ভাজা হয়ে গেলে সাথে সাথে চিনির সিরায় দিয়ে দিতে হয়। এর জন্য  আগে থেকেই চিনির সিরা তৈরি করে রাখতে হয়। এবার একের পর এক দারচিনি,তেজপাতা,এলাচ চিনির সিরায় দিয়ে দিতে হবে। আপানারা চাইলে ময়দার সাথে এগুলু দিতে পারবেন কিন্তু চিনির সিরায় দিলে ফ্লেভার টা ভালো আসবে।চিনির সিরাটা হতে থাকুক।  এবার অন্যদিকে চুলায় একটি প্যান বসিয়ে দিতে হবে ,প্যানটি গরম হয়ে গেলে তাতে তেল এবং এরপরে ঘি দিতে হবে। ঘি এর পরিমান টা আমি আধা কাপ বলেছি আপনারা চাইলে এক কাপ ও দিতে পারেন । তেল ও ঘি মিশানো হয়ে গেলে তেল যখন গরম হয়ে আসবে তখন ময়দা দিয়ে দিতে হবে। ময়দা দেওয়ার পর পরই নাড়তে থাকতে হবে যতক্ষণ না ময়দার রঙ লালছে ভাব হয়ে আসছে । অন্নদিকে চিনির সিরা যখন দেখবেন হয়ে গেছে তখন চুলা বন্ধ করে এক সাইডে রেখে দিন । তারপর যখন দেখবেন ময়দার ভাজার পর রঙটা লালছে ভাব হয়ে গেছে তখন এতে কিচমিচ ও চিনাবাদাম দিয়ে দিবেন। তারপর কিছু সময় নাড়ার পর চিনির সিরা এতে দিয়ে দিন দেওয়ার সাথে সাথে নাড়তে থাকুন আর অবশ্যই অল্প অল্প চিনির সিরা দিয়ে নাড়ুন ।যখন দেখবেন চিনির সিরা ময়দার সাথে মিশে শুকিয়ে এসেছে এবং ময়দার রঙটা লালচে হয়ে গেছে তখন তা নামিয়ে ঠাণ্ডা হতে দিন । একটু ঠাণ্ডা হওয়ার পরে তা পরিবেশন করুন। আপনি চাইলে পাউরুটি দিয়ে পরিবেশন করতে পারেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post