তালের বড়ার সহজ রেসিপি ও পুষ্টিগুণ - Easy Recipe and Nutritional Properties of Palm Bora

তালের বড়া খুবই পুষ্টকির খাদ্য এবং এটি তৈরির সহজ একটি রেসিপি আজ বণর্ণা করব। যেকেউ এটি অনুসরণ করে সহজেই তালের বড়া তৈরি করতে পারেন। তালের বড়া যেমন খেতে সুস্বাধু তেমনী রয়েছে এর পুষ্টিগুন। চলুন ধারাবাহিকভাবে আজকের রেসিপি ও তালের বড়ার পুষ্টিগুন নিয়ে আলোচনা করি। 
তালের বড়ার সহজ রেসিপি ও পুষ্টিগুণ

উপকরণ: তালের বড়া তৈরি করতে নিন্মক্ত উপকরণ নিতে হবে।

  • ১ কাপ তাল গুড়ানো 
  • ১ টেবিল চামচ বেসন (চালের বেসন বা বেসন ফুল হতে পারে)
  • ১ টেবিল চামচ ধনে পাতা গুড়ানো
  • ১ টেবিল চামচ কাচা মরিচ গুড়ানো (পরিমাণ স্বাদমতো বা স্বাদমতো এলাকার উপর নির্ভর করে)
  • স্বাদমতো লবণ
  • তেল (তাল ভর্তার জন্য সাধারণত সরিষার তেল ব্যবহার করা হয়)

প্রণালী: উপকরণ সংগ্রহ করা হয়ে গেলে আসুন এবার তালের বড়া তৈরি করি - 

১. একটি বাটিতে তাল গুড়ানো নিতে হবে। যে পরিমাণ  তালের গুড়ো নিবেন সেই হিসাবে অন্যন্য উপকরণ নিতে হবে।

২. এতে বেসন, ধনে পাতা গুড়ানো, কাচা মরিচ গুড়ানো এবং লবণ দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে।

৩. অতপর এতে পানি দিয়ে ভর্তার মত তৈরি করতে হবে। পানি এমনভাবে দিতে হবে যাতে সেই পরিমাণে ঘন একটি পাতলা মিশ্রণ পাওয়া যায়।

৪. একটি পাত্রে (কড়াই) তেল গরম করে তালের বড়া তৈরি করা শুরু করতে পারেন। তেলের পরিমাণ এমনভাবে দিতে হবে যাতে তালের বড়া তাতে ডুবে গিয়ে ভাজা হতে পারে।

৫. তালের গুড়ার তরল মিশ্রণ থেকে সামান্য পরিমাণ ছোট কাপে করে হাতে নিতে হবে। যে আকারের বড়া পেতে চান সেই পরিমাণে তালের তরল মিশ্রণ কাপে নিতে হবে। পাতলা বা পারফেক্ট বড়া তৈরি করতে হলে তালের মিশ্রণ হাতে কম পরিমাণে মিশ্রণ নিতে হবে। বড়াগুলো বাটিতে ছাপ দিয়ে চ্যাপ্টা করে নিলে ভালভাবে ভাজা হবে এবং খেতেও বেশ ভাল লাগবে। 

৬. সামান্য পরিমাণে বড়া তৈরি করে ভাজা হয়ে গেলে পাত্র থেকে উঠিয়ে নিয়ে নতুন করে বড়া দিলে সুন্দর ভাজা হয় এবং তেলে সুন্দর রং পাওয়া যায়।

৭. এভাবে সব বড়া তেলে ভেজে তালের বড়া তৈরি করে তুলে নিতে হবে।


এখন আপনি তালের বড়ার স্বাদ উপভোগ করতে পারেন। পরিবর্তে আপনি চাইলে চটপটে চিলি সস, টমেটো সস বা আপনার পছন্দমত সস দিয়ে তালের স্বাদ নিতে পারেন।  


তালের বড়ার কিছু স্বাস্থ্যগুণ নিম্নরূপ: ছোট বড় সবার প্রিয় এই তালের বড়ার স্বাস্থগুণ সম্পর্কে জেনে নিতে পারলে এর স্বাদ আরও বেড়ে যাবে। কারণ আমরা যা খাচ্ছি তা কতটা পুষ্টিগুণ সম্পন্ন তা জানতে পারলে খাবার স্বাদ আরও বেড়ে যায়।


১. ভিটামিন ও খনিজ: তালের বড়া ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম এবং জিংক সহ বিভিন্ন খনিজ সরবরাহ করে। এগুলো শরীরের প্রতিটি কণিকার কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে।

২. আয়রন: তালের বড়া আয়রনের একটি উত্কৃষ্ট উৎস। আয়রন রক্তে হেমোগ্লোবিন উৎপন্ন করে, যা পরিবাহিত করে অক্সিজেন। এটি রক্তনালীতে রক্তচাপ উন্নত করতে সাহায্য করে এবং আন্তিদাহ সংক্রমণের ঝুঁকি কমিয়ে তুলে।

৩. ফাইবার: তালের বড়ার মাধ্যমে প্রায় ৩ গ্রাম ফাইবার প্রতি ১০০ গ্রামে পাওয়া যায়। ফাইবার পুষ্টিকর এবং হজমের সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে।

৪. প্রোটিন: তালের বড়া প্রোটিনের ভালো উৎস। প্রোটিন শরীরের গাঠনে, পুষ্টি সংক্রান্ত কাজে এবং মাংসপেশীগুলির পুনর্নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

এছাড়াও, তালের বড়া মাংসের পাশাপাশি অপেক্ষাকৃত নিম্ন কোলেস্টেরল এবং ট্রান্স ফ্যাট ধারণ করে না, যা হৃদ রোগের ঝুঁকি কমিয়ে আনে।

এখানে মনে রাখতে হবে, তালের বড়া থেকে স্বাস্থ্যকর পুষ্টিগুণ পেতে হলে ভাল ও পরিপূর্ণ তাল থেকে বড়া তৈরি করতে হবে এবং ভালো মানের তেলে প্রস্তুত করা উচিত। সাধারণত, তালের বড়া ভাজা হয় সরিষার তেলে।   

তালের বড়ায় ভিটামিনের উৎস হিসেবে পরিচিত। এটিতে প্রায় সব প্রধান ভিটামিন রয়েছে, যা শরীরের স্বাস্থ্যকর কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিম্নে তালের বড়ার মাধ্যমে প্রায় পাওয়া ভিটামিনের পরিমাণ দেওয়া হলো:


ভিটামিন এ: প্রতি ১০০ গ্রাম তালের বড়ায় প্রায় ২৫০-৩০০ ইউনিট ভিটামিন এ রয়েছে।

ভিটামিন সি: প্রতি ১০০ গ্রাম তালের বড়ায় প্রায় ৮ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি রয়েছে।

ভিটামিন বি-১: তালের বড়ায় প্রায় ০.৩৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-১ থাকে।

ভিটামিন বি-২: প্রতি ১০০ গ্রাম তালের বড়ায় প্রায় ০.০২ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-২ রয়েছে।

ভিটামিন বি-৩: তালের বড়ায় প্রায় ০.২৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি-৩ থাকে।

ফোলেট (ভিটামিন বি-৯): প্রতি ১০০ গ্রাম তালের বড়ায় প্রায় ১৮ মিলিগ্রাম ফোলেট রয়েছে।

স্বাস্থকর এরকম আরও রেসিপি পেতে আমাদের সাথেই থাকুন --- 



Post a Comment

Previous Post Next Post